ক্ষমতার আসার পর থেকেই বাংলার প্রতি দুয়োরানিসুলভ আচরণ অব্যাহত রেখেছে মোদী সরকার। ১০০ দিনের কাজে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বারবার। এ নিয়ে চরমে পৌঁছেছে বিতর্ক। আর সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাসেই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। সেই নির্বাচন ২০২৪’র লোকসভা নির্বাচনের আগে কার্যত সেমিফাইনাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই হারের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। বলাই বাহুল্য, তার মূলে মোদী সরকারের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে আগামী অর্থবর্ষেও ১ টাকাও বরাদ্দ না করার সিদ্ধান্ত। কৃষিক্ষেত্রের বাইরে বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আয়ের মাধ্যম হল এই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প। সেই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত গ্রাম বাংলার ১ কোটির বেশি জব কার্ড হোল্ডার। অথচ সেই কাজের টাকা এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাকে দিচ্ছে না মোদী সরকার। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের কোটি কোটি মানুষের স্বার্থ স্রেফ অবজ্ঞা করে অনিয়মের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলার ওপর মনরেগা আইনের ২৭ নম্বর ধারা আরোপ করেছে কেন্দ্র। যার জেরে ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য সব টাকা আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাংলায়। শুধু তাই নয়, মেলেনি চলতি অর্থবর্ষের বরাদ্দও। কার্যত আগামী অর্থবর্ষেও একইভাবে বাংলাকে ও গারম বাংলার গরীব মানুষকে ভাতে মারার চক্রান্তের অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। পর পর দু’বছরে ১০০ দিনের কাজের মোট ৬২ কোটি শ্রমদিবস তৈরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলা। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নবান্ন। আরআসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির জন্য যে তা মোটেই ইতিবাচক ইঙ্গিত নয়, তা বেশ বুঝতে পারছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। সারা দেশে শুধুমাত্র বাংলার ক্ষেত্রেই ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে কেন্দ্র। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসন জানতে পেরেছে, অন্যান্য সব রাজ্যের আবেদন অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ অনুমোদন করে দিয়েছে মোদী সরকার। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই খাতে বাংলায় ৩০ কোটি শ্রমদিবস তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। আগামী অর্থবর্ষে তা ধরা হয়েছিল ৩২ কোটি। কিন্তু বরাদ্দ শূন্য হলে পুরো পরিকল্পনাই জলে যাবে। গ্রামীণ অর্থনীতিও পড়বে বিপর্যয়ের কবলে।