বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। চড়ছে রাজনীতির পারদ। চলতি বছরের মে মাসেই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বাংলায়। সেই মতোই যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। চলতি মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত করে ফেলা হচ্ছে, কাদের কাদের এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ডিউটি পড়তে চলেছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পঞ্চায়ত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা না হলেও মে মাসেই সেই নির্বাচন হতে পারে এমনটা ধরে নিয়েই জেলাশাসকদের ভোটকর্মীর তালিকা ২৭শে মার্চের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এবার প্রত্যেক অফিসকে লিখিত ভাবে তাদের কর্মীদের তালিকা পাঠাতে বারণ করে দেওয়া হয়েছে। বরং বলে দেওয়া হয়েছে, অফিসের ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার অনলাইনে তাঁর অফিসের কর্মীদের তালিকা জমা দেবেন। নামের পাশে কর্মীর পদমর্যাদা, অবসরের দিনক্ষণ, গুরুতর অসুস্থ থাকলে সেই ব্যাপারে সবিস্তার তথ্য অনলাইনে জানাতে বলে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, এপ্রিলের গোড়ায় রাজ্যের ২২টি জেলায় ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন। ভোট পরিচালনায় তথ্যপ্রযুক্তিকে হাতিয়ার করতে চলেছে কমিশন। কোনও ভোটকর্মী যে ব্লকে বসবাস করেন বা চাকরি করেন, সেই ব্লকের কোনও বুথে তিনি দায়িত্ব পাবেন না। কোন ভোটকর্মী কোন বুথে ভোটের ডিউটি করবেন, সেটা নির্ধারণ করার জন্য সফ্টওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগেই জানা যাবে বুথ ভিত্তিক ডিউটির কথা। ইতিমধ্যেই এই সফ্টওয়্যার সব জেলায় পাঠিয়েছে কমিশন।
পাশাপাশি কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ৬৩ হাজার ৩৩৯টি বুথ তৈরি হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৬৬ লক্ষ ৭৪ হাজার। ভোট হবে ব্যালটে। প্রয়োজন প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ ব্যালট বক্স। সেই জন্য ভিন রাজ্যের অপেক্ষায় না-থেকে কমিশন দেড় লক্ষ ব্যালট বক্স কিনেছে। ব্যালট বক্স লুট করে ভোটে কারচুপি রুখতে প্রতিটি ব্যালট বক্সে থাকছে কিউআর কোড। যা দিয়ে কমিশন নিজস্ব অ্যাপের সাহায্যে ব্যালট বক্সের গতিবিধির ওপর নজরদারি করতে পারবে। কমিশনের হিসেবে, ভোটগ্রহণ ও গণনার জন্য মোট প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ ভোটকর্মী দরকার। কিন্তু এত সরকারি কর্মী পাওয়া নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। কেননা একশ্রেনীর কর্মী এখন আন্দোলন করছেন এবং তাঁদের দাবি, মহার্ঘ্য ভাতা না দেওয়া হলে তাঁরা ভোটে অংশগ্রহণ করবেন না। ফলে তাঁদের মধ্যে ঠিক কতজনকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া যাবে, তা নিয়ে খটকা থাকছে। এর পাশাপাশি বহু পদ শূন্য। তাই এবারের পঞ্চায়েত ভোটের জন্য শুধু সরকারি কর্মীর ওপর ভরসা রাখা হচ্ছে না। বরং রাজ্যের পুরকর্মী, সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের এবং কেন্দ্রীয় সরকারি অফিস ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মীদের ওপর আস্থা রাখছে কমিশন।