শুরু হয়ে গিয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা। ক্রমশ বাড়ছে জনসমাগম। বুধবার বাবুঘাটে গঙ্গাসাগর মেলার অনুষ্ঠানে সকল পুণ্যার্থীদের শুভেচ্ছা জানান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আউটরাম ঘাট থেকে তিনি বার্তাও দেন। এমনকী বাবুঘাটে বারাণসীর ধাঁচে গঙ্গা আরতির কথাও ঘোষণা করেন তিনি। একদিন আগেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গিয়ে গঙ্গা আরতির কর্মসূচি নিয়েছিল বিজেপি। এদিনের ভাষণে বিজেপির নাম উচ্চারণ না করলেও বেশ কয়েকবার হিন্দুত্ব নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষে বিঁধেছেন মমতা। মকর সংক্রান্তি ১৫ইজানুয়ারি। আর গঙ্গাসাগর মেলা চলবে ১৭ই জনুয়ারি পর্যন্ত। এখানেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আগামীকাল ১২ই জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে বাবুঘাটে সন্ধ্যা আরতি করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বারাণসীর ধাঁচে কলকাতায় গঙ্গা আরতির কথা বলেছিলাম। সেই প্রস্তুতি শেষ হলেই গঙ্গা আরতি শুরু হবে। এরপর চাইব দক্ষিণেশ্বর এবং বেলুড়ে গঙ্গা আরতি হোক। সন্ধ্যায় গঙ্গা আরতির জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”
পাশাপাশি, আজ কলকাতার আউট্রাম ঘাট থেকে সাগরগামী পুণ্যার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে সকলকে নিরাপত্তার ব্যাপারে সতর্ক করেন মমতা। সকলকে ধীরে মেলায় যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। সাগরে রাজ্যে সরকার প্রচুর উন্নয়ন করেছে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যেতে গেলে জলের উপর দিয়ে প্রায় ৪৫ মিনিট ভেসেলে উঠতে হয়। আপনারা কেউ তাড়াহুড়ো করবেন না। তা না হলে যখন-তখন বড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। সকলে আসুন গঙ্গাসাগর মেলায়। ঘুরে দেখুন মেলা। এখান থেকে পবিত্র গঙ্গাজলে স্নান করুন। বাড়িতে নিয়ে যান পবিত্র গঙ্গা জল। আপনার পরিবারের এবং ছেলেমেয়েদের কল্যাণ হবে।” অন্যদিকে নাম না করে বিজেপির নিন্দায় সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। “কুম্ভ মেলা জাতীয় ফান্ড পায়। গঙ্গাসাগর তা পায় না। কুম্ভ মেলার জায়গাগুলি রেল পথে সংযুক্ত। গঙ্গাসাগর প্রান্তিক জায়গায় অবস্থিত। রেল পথে সংযুক্ত নয়। গঙ্গাসাগর মেলায় পরিকাঠামো বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। কেউ কেউ সমালোচনা করেই দায় সারেন। গঙ্গাসাগরে গিয়ে দেখুন সেখানে কত কাজ করেছে রাজ্য সরকার। বাংলায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে হামলা হয়নি। বাংলায় বন্দে ভারতে হামলা নিয়ে ভুয়ো খবর রটানো হয়েছিল। ভুয়ো খবর থেকে অশান্তি ছড়ায়। পরে জানা যায় বিহার থেকে ওই ঘটনা ঘটেছিল। কলকাতায় সন্ধ্যেয় গঙ্গা আরতি করার ব্যবস্থা করা হবে। আমরা সেই হিন্দু ধর্ম মানি যা স্বামীজি বলেছেন। সেই হিন্দু ধর্ম আমরা মানি যা রামকৃষ্ণ পরমহংস বলেছেন। সবাই একই কথা বলেছেন-মানবিকতা। মানব ধর্মই শ্রেষ্ঠ ধর্ম”, এমনই জানিয়েছেন মমতা।