এবার গণবিক্ষোভের সম্মুখীন হলেন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী কপিল মোরেশ্বর পাতিল। যোগ্যতা সত্ত্বেও আবাস যোজনায় ঘর মেলেনি, ১০০ দিনের কাজে স্থানীয়েরা নেওয়া হচ্ছে না, গঙ্গা ভাঙনের জেরে ভূতনির চরের বাসিন্দারা প্রতি বছরই ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন – এহেন বিবিধ অভিযোগে মোদী সরকারের মন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন মানিকচকের গ্রামবাসীরা। বুধবার কপিলকে কালো পতাকা দেখানো হয়। ওঠে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও। গোটা ঘটনায় আরও এক বার রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার দাবি তুলেছে শাসকদল। বুধবার মালদহের মানিকচকে ‘জনতার দরবারে’ উপস্থিত হন কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী কপিল। বুধবার সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগের কথা শোনার জন্য তিনি প্রথমে মানিকচক বিধানসভার উত্তর চণ্ডীপুর বিপি হাইস্কুল এবং পরে ভূতনি চণ্ডীপুর হাইস্কুলে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, ১০০ দিনের কাজ, গঙ্গাভাঙন ইত্যাদি নিয়ে গ্রামবাসীদের বক্তব্য শোনার জন্য এলাকায় এসেছিলেন। উত্তর চণ্ডীপুর বিপি হাইস্কুলে মন্ত্রীর কনভয়ে পৌঁছতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিযোগ জানাতে আসা এলাকাবাসীরা। মন্ত্রীর সামনে তাঁদের অভিযোগ, ভাঙন প্রতিরোধে কোনও কাজ হচ্ছে না। ফলে প্রতি বছর গঙ্গার ভাঙনে গৃহহীন হচ্ছেন তাঁরা। স্থায়ী সমাধানের দাবি করেন তাঁরা। অভিযোগ তুলেছেন, কেন্দ্রের আবাস যোজনা প্রকল্পেও যোগ্যতা অনুযায়ী ঘর পায়নি অনেকে। বার্ধক্য ভাতা কিংবা ১০০ দিনের কাজের টাকাও পাওয়া যায়নি বলে দাবি তাঁদের।
চাপে পড়ে উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে দফতরের প্রধান-সহ পঞ্চায়েত সদস্য এবং আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন মন্ত্রী। আধ ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক চলাকালীন দফতরের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকার উত্তেজিত জনতা। সেই সময় মন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানো হয়। ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন গ্রামবাসীরা। মন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানোর পর নৌসাদ আলি নামে এক গ্রামবাসী বলেন, “মন্ত্রী শুধু ভোটব্যাঙ্কের জন্য এসেছেন। সাধারণ মানুষকে বলেছে, ‘তোমাদের ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেব। তোমরা কাগজপত্র নিয়ে এসো।’ তবে নিজের পার্টির লোক ছাড়া কাউকে তা বলেনি। তাই মন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখিয়েছি।” হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতেও বিক্ষোভের মুখে পড়েন মন্ত্রী। যদিও তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্য সরকারের থেকে গঙ্গাভাঙন রোধে কোনও প্রস্তাব কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যায়নি। তাই গঙ্গাভাঙনের কোনও স্থায়ী সমস্যার সমাধান হয়নি।’’ বিজেপিকে একহাত নিয়ে মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, ‘‘ভূতনির চরে বাঁধ নেই। কেন্দ্রের মানুষের (মন্ত্রীর) কাছে গঙ্গার ভাঙন রোধের টাকার আবেদন করতেই হয়তো গিয়েছিলেন সাধারণ মানুষ।’’ তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘‘গ্রামবাংলায় একটা কথা রয়েছে, ‘মমখেতে দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কিল মারার গোঁসাই।’ কেন্দ্রের অবস্থা হল তা-ই। কেন্দ্র কি নিজের পকেট থেকে টাকা দেয়? ১০০ দিনের কাজে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশের টাকা তো আটকে রাখে না নরেন্দ্র মোদী সরকার!’’, কেন বাংলার সঙ্গে এহেন বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে কেন্দ্র? প্রশ্ন তুলেছেন জয়প্রকাশ।