দীর্ঘ করোনা অতিমারীকালেই উত্তরপ্রদেশের অস্থিচর্মসার স্বাস্থ্যব্যবস্থার চিত্র ভয়াবহভাবে ফুটে উঠেছিল। নদীতে সারি সারি লাশ ভেসে যাওয়ার দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছিল দেশবাসী। কিছুদিন আগেই কুশীনগরের এক মাকে সন্তানের নিথর দেহ কোলে নিয়ে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল। এ বার ফের প্রকাশ্যে এল ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকারের ব্যর্থতার ছবি। ১৪ বছরের ছেলের দেহ কাঁধে নিয়ে গ্রামের উদ্দেশে হাঁটলেন বাবা। ঘটনাটি প্রয়াগরাজের। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর ছেলে শুভমকে প্রয়াগরাজের স্বরূপরানি নেহরু হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন বজরঙ্গী যাদব। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয়েছিল শুভমের। হাসপাতাল থেকে শুভমের দেহ ছেড়ে দিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু ছেলের দেহ কী ভাবে বাড়িতে নিয়ে যাবেন তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন বজরঙ্গী এবং তাঁর স্ত্রী।
এরপর ছেলের দেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েছিলেন বজরঙ্গী। অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুল্যান্স বা কোনও শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করে দেননি। দরিদ্র বজরঙ্গীর কাছে অত টাকাও ছিল না যে কোনও গাড়ি ভাড়া করে ছেলের দেহ বাড়িতে নিয়ে যাবেন। তাঁর দাবি, এক একটি গাড়ি প্রচুর ভাড়া চাইছিলেন, যা তাঁর পক্ষে কোনও ভাবেই মেটানো সম্ভব ছিল না। অগত্যা শেষমেশ ছেলের দেহ সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে কাঁধে ফেলে বাড়ির উদ্দেশে স্ত্রীকে নিয়ে হাঁটা লাগান বজরঙ্গী। রাস্তা দিয়ে দেহ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি, এই দৃশ্য পথচারীদের অবাক করেছিল। তাঁদেরই কেউ সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন এবং নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ছেলের দেহ কাঁধে নিয়ে ২৫ কিলোমিটার হেঁটে গ্রামে পৌঁছন বজরঙ্গী। মর্মান্তিক এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকে গ্রামবাসী। ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটাগরিকরা। প্রবল নিন্দার মুখে যোগী সরকার।