যুগের পর যুগ এসেছে, অথচ গতানুগতিক চিন্তাভাবনা গোঁড়ামি থেকে এখনও বেরতে পারেনি এই সমাজ। গত ১৬ জুন থেকে স্কুলের মিড ডে মিল খাচ্ছে না ১৪৭ জন স্কুলপড়ুয়া! তারা সকলেই ওবিসি কমিউনিটির। তাদের পরিবারের দাবি, স্কুলের মিড ডে মিল রান্না করেন এক দলিত মহিলা। তাঁর হাতে রাঁধা খাবার বাচ্চারা খাবে না! গুজরাতের মরবি এলাকার একটি সরকারি স্কুলে চলছে এই ‘জাতের নামে বজ্জাতি’। সূত্রের খবর, ওই স্কুলটিতে গুজরাতের কোলি, ভারোয়াদ, ঠাকুর-সহ নানা সম্প্রদায়ের শিশুরা পড়াশোনা করে। তারা মূলত ওবিসি সম্প্রদায়ভুক্ত। তাদের মধ্যে জাতপাত নিয়ে প্রবল ছুঁতমার্গ রয়েছে। তাই তাদের পরিবার মিড-ডে মিলের খাবার বাচ্চাকে খেতে দিতে অস্বীকার করেছে। জানা গেছে, সম্প্রতি ধারা মাকোয়ানা নামে এক মহিলা মরবি এলাকার শ্রী সোখদা প্রাইমারি স্কুলে মিড ডে মিলের রান্না করার দায়িত্ব পেয়েছেন। প্রথম দিন, ১৬ জুন তিনি স্কুলে গিয়ে ১৫৩ জন পড়ুয়ার জন্য রান্না করেন। কিন্তু ওবিসি সম্প্রদায়ের ১৪৭ জন পড়ুয়া সেই রান্না করা খাবার খেতে চায়নি বলে অভিযোগ।
এই নিয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই মহিলার স্বামী গোপী মাকোয়ানা। তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ছাত্ররা কিছুতেই খাবারের লাইনে বসছিল না। তিনি বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের আলাদা করে জিজ্ঞাসা করেন, তখনই তাঁরা বলেন, দলিত মহিলার রান্না করা খাবার বাচ্চারা খাবে না। ফলে প্রচুর খাবার নষ্ট হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ যদিও অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু কেউ কথা শুনতে চাননি। প্রতিদিন একই কাণ্ড হতে থাকে। এই ঘটনায় স্কুলের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, অভিভাবকদের সঙ্গে মিটিং করেছেন তাঁরা, বুঝিয়েছেন জাতের এমন ফারাক হয় না। সব মানুষই সমান। তবু এত বছরের গোঁড়ামি ভেঙে তাঁরা বুঝতে চাইছেন না। গোপী মাকোয়ানার দাবি, বিষয়টি বোঝানোর নয়, পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা দরকার। অথচ পুলিশের মনোভাব গা-ছাড়া, তারা বলছে এটা প্রশাসন আর স্কুলের ব্যাপার।