বাংলায় কৃষি জমির খাজনা ও মিউটেশনের খরচ সম্পূর্ণ মকুব করা হয়েছে। এর পাশাপাশি চলতি আর্থিক বছরে রবি ফসল ও গ্রীষ্মকালীন ফসলগুলির জন্য বিমার পুরো টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষিতে রাজ্য সরকারের এমনই সব কর্মসূচি ও সাফল্য নিয়ে এবার দলের খেত মজুর সংগঠনকে প্রচারে নামার নির্দেশ দিল তৃণমূল। রবিবার তৃণমূল ভবনে কিষান খেত মজুর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সভায় যোগ দিয়ে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এই নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, রাজ্যে গত ৮ বছরে কৃষকের আয় ৩ গুণ বৃদ্ধির বিষয়কে প্রচারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে ওই বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ এ নিয়ে রবিবার একটি টুইটও করেছেন। গতকাল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরি চরণ সিংহের জন্মদিন উপলক্ষ্যে কিষান দিবস স্মরণে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৮ বছরে রাজ্যে কৃষকের আয় ৩ গুণ বেড়েছে। ২০১০-১১ সালে রাজ্যে কৃষকের মাথা পিছু আয় ছিল ৯১ হাজার টাকা। এখন তা দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৯১ হাজারে।
রবিবারের বৈঠকে ওই টুইটের কথা উল্লেখ করে পার্থ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এই টুইট গ্রামে-গঞ্জে প্রচার করুন। রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য কী কর্মসূচি নিয়েছে, বিস্তারিত ভাবে সেগুলি প্রচারে রাখুন। পাশাপাশি তুলে ধরুন বিজেপির ভ্রান্ত নীতির জেরে বিভিন্ন রাজ্যের কৃষকেরা কী ভাবে ঋণের ফাঁদে পড়ে আত্মহননের পথে পা বাড়াচ্ছেন, সে কথা।’
অন্যদিকে, সরকারের তরফে রবি ফসল ও গ্রীষ্মকালীন ফসলগুলির জন্য বিমার পুরো টাকা দেওয়ার ফলে কৃষকেরা নিখরচায় ওই ফসলগুলির জন্য বিমা করতে পারবেন। শুধু আলু ও আখের জন্য প্রিমিয়ামের সর্বাধিক ৪.৮৫ শতাংশ কৃষকদের দিতে হবে। আর গম, ভুট্টা, ছোলা, মুসুরি, সর্ষে, বোরো ধান, মুগ, তিল ও বাদামের বিমার জন্য কৃষকদের কোনও খরচ নেই। এই বিষয়টিকেও কৃষকদের সামনে তুলে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন পার্থ।
যদিও খেত মজুর সংগঠনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে এই প্রচারের পাশাপাশি আরও অনেক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জানা গেছে, সিঙ্গুরের জমিতে ধানচাষ হয় না বলে অভিযোগ তুলে বামেরা যে কৃষক সমাবেশ করেছে, এর পাল্টা হিসেবে তৃণমূলের কৃষক সংগঠনও সিঙ্গুর থেকে পদযাত্রা করে নবান্নয় এসে নিজেদের জমির ধান মুখ্যমন্ত্রীকে উপহার দেবে।
সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি নিয়ে খেত মজুর সংগঠন নিজেদের জমির ধান নিয়ে সিঙ্গুর থেকে মিছিল করে নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে চায়। সিঙ্গুরের জমিতে চাষ হচ্ছে না বলে বামেরা যে অভিযোগ তুলেছে, এটাই হবে তার জবাব। কারণ সিঙ্গুরের কৃষকরা দেখিয়ে দিতে চান সেখানে ভাল মতোই ধান চাষ হচ্ছে।’ আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে সংগঠনের তরফে তৃতীয় কৃষক সম্মেলন হবে। ওই সম্মেলনে দলেনত্রীকেই প্রধান বক্তা করা হচ্ছে।’