কেন্দ্রের মাথাব্যথা আরও খানিকটা বাড়িয়েই রাফাল ইস্যুতে এবার কংগ্রেসের পাশে এসে দাঁড়াল তৃণমূল। জানা গেছে, মোদী-বিরোধী জোট বজায় রাখতে এবং রাফাল দুর্নীতিতে আরও জোরদার তদন্তের দাবিতেই সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এমন পদক্ষেপ তৃণমূলের।
সব কাজ ফেলে সংসদে রাফাল নিয়ে আলোচনা চেয়ে গতকাল লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। যদিও তা অনুমোদন করেননি স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। একইভাবে বিরোধী ঐক্য বজায় রাখতে সওয়াল করেন তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
তিনি বুধবার স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, ‘কংগ্রেস যা দাবি করছে তা নিয়ে আলোচনা হোক। আমাদেরও কিছু দাবি রয়েছে। সরকারপক্ষও কিছু দাবি করছে। তাই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে আলোচনা হোক। আমরা চাই সংসদ চলুক।’ পরে তিনি আরও বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কৃষক ইস্যুতে তৃণমূলই সবার আগে সরব হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা চাই। তাই হইচই না করে বিতর্কে অংশ নিতে চায় আমাদের দল।’
সংসদ ভবন চত্বরে তৃণমূল ধর্না দেখালেও এখনও পর্যন্ত লোকসভার মধ্যে কোনও ইস্যুতে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ দেখায়নি তৃণমূল। কিন্তু রাফালে কংগ্রেসের মতোই যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন চান কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে মুলতুবি প্রস্তাবের নোটিস দেওয়া সৌগতবাবু বলেন, ‘সেসব তো পরে হবে। আগে তো আলোচনা হোক। সেটাই তো হচ্ছে না।’
লাগাতার ছ’দিন হয়ে গেল সংসদে অচলাবস্থা বজায় রয়েছে। রাফাল ইস্যুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে কংগ্রেস যেমন জেপিসির দাবিতে অনড়, তেমনই প্রয়াত জয়ললিতার দলের সাংসদরা তামিলনাড়ুতে কাবেরী নদীর উপর বাঁধ তৈরির বিরোধিতায় সরব। আবার অন্ধ্রপ্রদেশের শাসক দল টিডিপি রাজ্যের জন্য স্পেশাল আর্থিক প্যাকেজের দাবিতে সোচ্চার। সব মিলিয়ে সভার একপ্রকার হযবরল অবস্থা।
অন্যদিকে দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়ান অভিযোগের সুরে বলেন, ‘মোদী সরকার সংসদ চালাতেই চাইছে না। তাই এআইএডিএমকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। ওটা ওদের ম্যাচ ফিক্সিং। তবে আমরা বিরোধীরাও রাজ্যসভায় একজোট হয়ে সরকারকে জানিয়ে দিয়েছি, হইচইয়ের মধ্যে কোনও বিল পাশ করাতে দেব না।’ ডেরেক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘যথাযথ পর্যালোচনা না করে, স্রেফ সরকারের ইচ্ছামতো বিল পাশ করা চলবে না।’