তাঁর সময়েই মেয়রের সঙ্গে সরাসরি আমজনতার যোগাযোগ, অভাব-অভিযোগ জানানো এবং চটজলদি সমাধানে ‘টক টু কেএমসি’র মত অনুষ্ঠান জনপ্রিয় হয়েছে। দুর্নীতিমুক্ত কলকাতা পুরসভা গড়তে পেরেছেন তিনি, বিশ্বাস ফিরহাদ হাকিমের। এখন তিনি কলকাতা পুরসভার বিদায়ী মেয়র। ফের জোড়াফুলের প্রার্থী হয়েছেন ৮২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। উল্লেখ্য, একাধিক মন্ত্রিত্ব সামলেও, আট-দশটা গাড়ির কনভয়ের দেখনদারি কোনওদিনই নেই ফিরহাদের। ছাপোষা কাউন্সিলার থেকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বা কলকাতার মেয়র হয়েও সদাহাস্য ‘ববি’ সকলের কাছেই ‘কাছের লোক’। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ভরসা রেখেছেন আস্থাভাজন টিম-ববিতেই। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এবারের পুরভোটে নিজেদের মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেনি। কিন্তু প্রার্থী তালিকা দেখে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে ঘাসফুলের বোর্ড তৈরি হলে, ববির দেখানো পথেই যে মহানগরী এগোবে, তা বলাই বাহুল্য।
নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ী ফিরহাদ। জানিয়েছেন, “ভোটে জেতা শুধু সময়ের অপেক্ষা। এখানে বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। বিধানসভার মত কলকাতা পুরভোটেও তৃণমূল কংগ্রেস চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বোর্ড গড়বে।” ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মেয়রের দায়িত্ব পেয়েছিলেন ফিরহাদ। লোকসভা ভোট সামলাতে হয়েছে। তারপর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই করোনার থাবা। গত তিন বছর ধরে করোনা এবং আমফানের প্রকোপ সামলাতেই অনেকটা সময় কেটেছে। ফিরহাদ হাকিমের কথায়, “করোনা-ঘূর্ণিঝড় সামলাতেই বেশি সময় গিয়েছে। কিছু কাজ হলেও, সামগ্রিকভাবে উন্নয়নের কাজ সেভাবে করা যায়নি। ভিশন ডকুমেন্ট রেডি করেছি। এবার দায়িত্ব পেলে সেগুলি কার্যকর করব।” আরও পরিচ্ছন্ন শহর, স্মার্ট কর ব্যবস্থা, পুর পরিষেবার আরও আধুনিকতা, গ্রিন কলকাতা, এগুলি তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায়।
পাশাপাশি, গত তিন বছরে কলকাতার বিভিন্ন অংশে পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে প্রায় ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একাধিক পাম্পিং স্টেশন এবং জলাধার তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে একাধিক নিকাশি পাম্পিং স্টেশন। শহরের আরও কয়েকটি অংশে পানীয় জলের সমস্যা সমাধানে নতুন বুস্টার পাম্পিং স্টেশন গড়তে চান ববি। জঞ্জাল ব্যবস্থাপনায় আরও আধুনিকীকরণ করতে চান ফিরহাদ। ধাপাতে তৈরি হয়েছে জঞ্জাল পৃথকীকরণ এবং পুনর্নবীকরণ ইউনিট। সেখানে পচনশীল জঞ্জাল থেকে তৈরি হচ্ছে সার। ফিরহাদের আমলেই সেখানে তৈরি হচ্ছে প্লাস্টিক কিংবা প্লাস্টিকজাত জঞ্জাল পুনর্নবীকরণ করে চেয়ার, টেবিল, দরজা কিংবা ফুলদানি তৈরির কাজ। আগামী দিনে ধাতু বা ধাতবও জঞ্জাল পুনর্নবীকরণ ইউনিটও হবে। নির্মাণ কাজের জঞ্জাল পুনর্নবীকরণ করে বালি তৈরি করে সেটা শহরের রাস্তা তৈরিতে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে বিদায়ী মহানাগরিকের।