নিজের গা থেকে সমাজবাদীর তকমা ঝেড়ে ফেলে এবার কি আপাদমস্তক হিন্দুত্ববাদীই হয়ে গেলেন অমর সিং! তা না হলে আজন্মকাল সঙ্ঘ বিরোধী বলে পরিচিত অমর হঠাতই নিজের পৈতৃক জমি-বাড়ি সঙ্ঘকে হেলায় দান করলেন কী মনে করে? সদ্যই প্রাক্তন সপা নেতা তাঁর প্রায় ১৫ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তি বিলিয়ে দিয়েছেন সঙ্ঘ পরিচালিত অলাভজনক সংস্থা ‘সেবা ভারতী’কে। যা নিয়েই এখন জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে।
উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের তারোয়ান গ্রামে তাঁর ১০ বিঘা জমির বাজার দর ১০ কোটি টাকা। জমির এক প্রান্তে পৈতৃক ভিটের দাম ৪ কোটি টাকার বেশি। সপা সদস্য থাকাকালীন এবং তার পরেও যখন পেরেছেন সঙ্ঘকে তুলোধোনা করেছেন অমর। সেই তিনিই সঙ্ঘকে এত বড় দান করায় জল্পনা চলছেই। সকলেরই এক প্রশ্ন, অমর কি তবে চিরকালই ‘চোরা’ হিন্দুত্ববাদী ছিলেন? এর উত্তরে রাজ্যসভার সাংসদ অবশ্য জানিয়েছেন, প্রয়াত বাবার স্মৃতি অমর করতেই তিনি জমি দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘বাবার নামে জমি দিয়ে আসলে সমাজে কিছু অবদান রাখার চেষ্টা করেছি।’
তবুও সন্দেহের অবকাশ থাকছেই। কারণ অনেক ছোট ছোট দলের নেতারাই ইদানীং সঙ্ঘের মাধ্যমে গেরুয়া রাজনীতিতে ভেড়ার চেষ্টা করছে। অমরও সেই পথের পথিক কিনা, তা নিয়ে চলছে জল্পনা। প্রসঙ্গত, ২০১০-এ সপা ছাড়ার পর পৃথক রাজ্য পূর্বাঞ্চলের দাবিতে অমর রাষ্ট্রীয় লোকমঞ্চ তৈরি করেছিলেন। এমনকি ২০১২ সালের উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে ৩৬০ জন প্রার্থীও দাঁড় করিয়েছিলেন।
যদিও একটি আসনও জেতেননি তাঁর দল। নিজের গড় আজমগড় অবধি হাতছাড়া হওয়ায় রাজনীতিতে সন্ন্যাস নিয়েছিলেন অমর। তবে ২০১৬ সালে ফের সপায় ফেরেন মুলায়ম সিং যাদবের ডাকে। ক্ষণস্থায়ী ছিল সেই ফেরা। ২০১৭-র জানুয়ারিতে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে তাঁকে বরখাস্ত করেন মুলায়মপুত্র অখিলেশ যাদব। তাই কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় না থাকা অমরের এই ‘সঙ্ঘ-প্রীতি’কে অন্য নজরেই দেখছে রাজনৈতিক মহল।