এ বছর আমন ধান চাষের সময় ভয়ংকর জল সঙ্কটে পড়েছিল পূর্ব বর্ধমানের কৃষকরা। সে সময় ডিভিসির জল ছেড়ে সেই অবস্থা কোনও মতে সামাল দেওয়া গেলেও, বোরো বা রবি-শস্য চাষের সময় কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তাঁরা। তবে শুক্রবার জেলায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাষের পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ জানালেন এবং অভয় দিলেন সকল কৃষককে।
কালনার অঘোরনাথ পার্ক স্টেডিয়ামের সভায় কৃষকদের আয় নিয়ে কেন্দ্রেকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আসার পথে দেখলাম খুব সুন্দর ধান হয়েছে। কেন্দ্র বলছে, চাষিদের আয় দ্বিগুণ করবে। আমরা এখনই তিন গুণ করে দিয়েছি।’ সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস,মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ,সাংসদ, বিধায়করা-সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা।
বর্ধমান জেলা কার্যত কৃষিপ্রধান জেলা। তাই কৃষকদের অভয় দিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কৃষিপ্রধান বর্ধমান চাষীদের স্বার্থে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্ধমান জেলায় আছে মাটি তীর্থ। চাষের জলের সমস্যা মেটাতে ২,৭৬৮ কোটি টাকার প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে। এই টাকায় তৈরি হবে নিম্ন দামোদর অববাহিকা পরিকল্পনা। তাতে হাওড়া, হুগলি, দুই বর্ধমান ও বাঁকুড়ায় সেচ-পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আগামী ২-৩বছরে পরিকল্পনার ফল মিলবে।
একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, কৃষিজমির খাজনা, ‘মিউটেশন ফি’ মকুব করা হয়েছে। ফসলে বিমায় চাষিদের কিস্তির টাকা রাজ্য সরকার দিচ্ছে। এর পাশাপাশি এক লক্ষ চাষিকে পেনশন, বিকল্প চাষ, ফসলের ক্ষতিপূরণ, কৃষিযন্ত্র বিলির মতো নানা সুযোগ-সুবিধার কথাও জানান তিনি। এটা জানাতে প্রচার চালানো হবে বলেও জানান তিনি।
এর পাশাপাশি, কালনার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করতে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, কালনায় গঙ্গার উপর নতুন ব্রিজ নির্মাণ হবে। যা করতে খরচ হবে হাজার কোটি টাকা। প্রশাসনের তরফে জমি অধিগ্রহণের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও এদিনের সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ১৪ টি প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেন।