কর্মসংস্থান, কালো টাকা, বিকাশ সব চুলোয় পাঠিয়ে ভোটের মরশুমে জাত-গোত্র নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। এমনই অভিযোগ করল বিরোধীরা।
সম্প্রতি রাজস্থানের পুষ্করে ব্রক্ষ্মা মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে নিজের গোত্র ‘দত্তাত্রেয়’ বলে উল্লেখ করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। কিন্তু বিজেপির দাবি, নিজের জাত, ধর্ম ও গোত্র নিয়ে সত্য বলছেন না রাহুল। কারণ রাহুলের বাবার বাবা ফিরোজ গান্ধী পার্সি ছিলেন। রাহুল যে ধর্ম ও গোত্রের উল্লেখ করেছিলেন, তা তাঁর মায়ের দিক থেকেই। কিন্তু বাবার জাত-গোত্রই গ্রাহ্য হয়, মায়ের নয়। এই বিবাদের মধ্যেই আবার টুইটারে প্রশ্ন উঠেছিল বিজেপির ওজনদার নেত্রী স্মৃতি ইরানি ও তাঁর স্বামী-সন্তানদের গোত্র নিয়ে। তার জবাব দিতে গিয়ে স্মৃতিও কিন্তু পরোক্ষে ঠেস দিয়েছেন রাহুলকে।
অর্থাৎ বিজেপি গোত্র-যুদ্ধ থেকে সরছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হচ্ছে, রাহুল ইচ্ছাকৃত ভাবে জওহরলাল নেহেরুর গোত্র বলছেন। ওঁর বলা উচিৎ ফিরোজ গান্ধীর গোত্র কী ছিল। সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি মুখপাত্র শাহনওয়াজ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন আসতেই নিজের গোত্র মনে পড়ে গিয়েছে রাহুলের’। রাজস্থানের নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘রাহুলের প্রপিতামহ বলতেন দূর্ঘটনাবশত তিনি হিন্দু, এখন তাঁর চতুর্থ প্রজন্ম নিজের গোত্র জানাচ্ছেন’। রাহুলের গোত্র উল্লেখ প্রসঙ্গে আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী জ্যোতিও।
এদিকে রাহুলের পর নিজের গোত্র জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। টুইটারে জনৈক ব্যক্তির প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাবা হিন্দু ছিলেন। গোত্র ছিল ‘কৌশল’। যেমন ছিল তাঁর বাবার বাবার এবং তাঁর বাবার এবং তাঁরও বাবার গোত্র। তাই তাঁরও গোত্র কৌশল। স্মৃতি আরও জানিয়েছেন, ‘আমার স্বামী এবং সন্তানেরা জোরাস্ট্রিয়ান। তাই তাঁদের কোনও গোত্র থাকার প্রশ্ন নেই। আমি যে সিদুর পড়ি তার কারণ আমি হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী’। অর্থাৎ নিজের বাবা এবং তাঁর বাবার কথা তুলে স্মৃতি যে পরোক্ষে রাহুলকেই ঠুকলেন সেটা স্পষ্ট।
রাজনীতির ময়দানে জাত-গোত্র নিয়ে এই লড়াইয়ে মূল রাজনৈতিক ইস্যুগুলি চাপা পড়ে যাচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপির সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ কীর্তি আজাদ। পুরো বিষয়টিকে তিনি বিজেপির ‘গেমপ্ল্যান’ বলে মনে করছেন। টুইটারে বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে তিনি লেখেন, ‘বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীর গোত্রের পেছনে পড়েছেন কেন? দয়া করে বরং কর্মসংস্থান, কালো টাকা, স্মার্ট সিটি, স্টার্টআপ ইন্ডিয়া, নির্মল গঙ্গা এবং দেশের ব্যাঙ্কগুলোকে লুট করে বিদেশে পালানো নিয়ে আলোচনা করুন। সুশাসন নিয়ে আলোচনা করুন। এই সব বিষয়ে সাধারণ মানুষ আমাকে অনেক প্রশ্ন করছেন। তাঁদের কী জবাব দেব, বলে দিন’।