তৃণমূল জমানায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটতে রাজ্যে মৎস্যচাষেও গতি এসেছে। বাংলায় মাছের উৎপাদন আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় একথা জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আগে উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১১ লক্ষ মেট্রিক টন। এখন আরও ৭ লক্ষ মেট্রিক টন বেড়েছে। বাঙালি মাছে-ভাতেই থাকে। যেমন দুধে-ভাতে থাকে বাংলা। ছোটবেলা থেকে এগুলো শুনেই আমরা বড় হয়েছি। এখন মাছের উৎপাদন নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও আমাদের রাজ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে মাছ আসে। কিন্তু আমরা নিজেরাই উৎপাদনে আরও জোর দিয়েছি। একটি উচ্চ পর্যায়ের এগ্রি মার্কেটিং কমিটি রয়েছে। সেখানে মাছ, ধান, আলু সব কিছু নিয়েই আলোচনা হয়। কমিটিতে ৭টি দপ্তরের মন্ত্রীরা রয়েছেন। মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবও রয়েছেন। এখন আমাদের রাজ্যের জলাশয়গুলিতে প্রচুর মাছ চাষ হচ্ছে।’
মমতা জানান, ‘আমাদের রাজ্যে ইলিশ মাছ ছিল না। আমরা ইলিশ গবেষণা কেন্দ্র করেছি। বাংলাদেশ থেকে আমরা ইলিশ পাই না। কোলাঘাট-সহ কয়েকটি জায়াগা থেকেই ইলিশ আসে। জল ধরো জল ভরো প্রকল্পে যে পুকুরগুলি কাটা হয়েছে, সেগুলিতে এবার মাছ চাষ হচ্ছে। মৎস্যচাষীদের জীবনজীবিকা নির্ভর করে মাছ চাষের ওপর। তাই ছোট মাছ, পোল্ট্রির ওপরেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে হাঁসের ছানাও দেওয়া হচ্ছে।’
বিধায়ক দীপককুমার হালদার এদিন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার কাছে জানতে চান, ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার এশিয়ার মধ্যে সর্ববৃহৎ ইলিশ বিক্রয় কেন্দ্র কিনা। মন্ত্রী জানান, সরকারি ভাবে এরকম বলা নেই কোথাও। এরপর অতিরিক্ত প্রশ্নে দীপক বলেন, নগেন্দ্রবাজার মৎস্য কেন্দ্র এলাকায় প্রচুর যানজট হচ্ছে। অ্যাম্বুল্যান্সও যেতে পারে না। মন্ত্রী বলেন, আমরা রাস্তা করব। এরপর দীপককুমার হালদার জেটির প্রসঙ্গ তুলতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সেচ দফতরের বিষয়। এক দফতরের বিষয়ে অন্য দফতরের মন্ত্রীকে প্রশ্ন করবেন না।’
মৎস্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘আমরা মৎস্যজীবীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, যে জেলায় যে মাছ বিখ্যাত, সেগুলি চাষ শুরু হয়ে গেছে। এরপর নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে বলেন, সকলকে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। নিজেরাও উদ্যোগ গ্রহণ করুন। পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিডিওদের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাস্তাও কী মৎস্যমন্ত্রী তৈরি করে দেবেন? তবে বিধায়ক জ্যোতির্ময় কর বলেন, ‘মাছ ব্যবসায় অনেক ছোট ব্যবসায়ী উপকৃতই হচ্ছেন।’