মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ‘কানন’ নিজেই। এবার পালা তাঁর মহানাগরিকত্ব খোয়ানোর। তাই ‘পথভ্রষ্ট’ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জায়গায় কলকাতার মেয়র পদের জন্য কাকে বেছে নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? আজ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের জরুরি বৈঠকের আগে রাজনৈতিক মহলে এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।
রাতারাতি যেভাবে পুর আইন সংশোধনের জন্য বিল আনা হচ্ছে, তাতে দলের একাংশের বক্তব্য, কাউন্সিলর নন এমন কাউকেই কলকাতার মেয়র করতে পারেন মমতা। তবে সেক্ষেত্রে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর মতো ছ’মাসের মধ্যে কোনও ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। সূত্র থেকে পাওয়া খবর, সেক্ষেত্রে দলনেত্রীর বিবেচনায় আছে রাজ্যের ৪ মন্ত্রী ও ১ সাংসদের নাম। এবং তাঁদের মধ্যে দৌড়ে আপাতত এগিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
যদিও এখনও অব্দি তিনি মেয়র পদে ইস্তফা দেননি, তবুও শোভনের ইস্তফা পরবর্তী পরিস্থিতির সাপেক্ষে বুধবার পর্যন্ত যে নামগুলি ‘সম্ভাব্য’ হিসেবে ঘোরাফেরা করছে, সেই তালিকায় ৫ বর্তমান কাউন্সিলর আছেন। তাঁরা হলেন দেবাশিস কুমার, মালা রায়, অতীন ঘোষ এবং মলয় মজুমদার এবং বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। তবে এই তালিকায় এগিয়ে আছেন দেবাশিস এবং অতীনই।
তবে কাউন্সিলর নন, এমন ৪ মন্ত্রীর নাম নিয়েও তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা কম নয়। তাঁদের মধ্যে এক নম্বরেই আছে ফিরহাদের নাম। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ যথাক্রমে অরূপ বিশ্বাস, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং শশী পাঁজা। তৃণমূলের বৃহদাংশের অনুমান বিশ্বাস করতে হলে এঁদের মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে ফিরহাদ।
এমনিতেই শোভনের ছেড়ে যাওয়া দু’টি দপ্তর ফিরহাদকেই দেখতে দিয়েছেন মমতা। এরপরে কলকাতার মেয়র পদটিও তাঁকে দেওয়া হলে ফিরহাদের ক্ষেত্রে রাজনীতির একটি বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে। কারণ, জনশ্রুতি, অতীতে অভিজ্ঞ কাউন্সিলর ফিরহাদকে দৌড়ে হারিয়েই শোভন কলকাতার মেয়র হয়েছিলেন। ফিরহাদ ঠান্ডামাথার রাজনীতিক। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা এবং জনসংযোগের ক্ষেত্রেও প্রথম সারিতে। তবে এমনিতেই তাঁর ওপর দল ও সরকারের প্রচুর দায়িত্ব। মেয়রের কাজের ভারও মমতা তাঁর ওপর দেন কি না, সেটাই এখন দেখার।
আবার, কাউন্সিলর হিসেবে অরূপ এবং শশীরও অভিজ্ঞতা আছে। অন্যদিকে, কলকাতার মেয়র হিসেবে প্রশ্নাতীত সাফল্যের ইতিহাস আছে সুব্রতর। তবে এঁদের মধ্যে যেই মেয়র হোক, তাঁকে আইন সংশোধনের পর ছ’মাসের মধ্যে কোনও একটি ওয়ার্ড থেকে জিতে আসতে হবে হবে। প্রসঙ্গত, পুর আইন অনুযায়ী মেয়র পদত্যাগ করলে সব মেয়র পারিষদকেও পদত্যাগ করতে হবে। নতুন মেয়রের নেতৃত্বেই আবার তাঁদের শপথ নিতে হবে।