তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নেওয়ার আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার তৃণমূল নেত্রীর জয়ের হ্যাটট্রিকে অভিনন্দনবার্তা জানিয়েছেন স্বয়ং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ’ ধারণ করায় তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটি চিঠিও লিখেছেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সেই চিঠিতে বাংলার দীর্ঘদিনের চর্চিত ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি’ এবং ‘সৌভ্রাতৃত্ব’কে ধরে রাখার জন্য মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই সম্প্রীতির আদর্শ নিয়েই দেশ গড়েছিলেন।
রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মোদী সরকারকে এই বক্তব্যের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্ম ভাবে বার্তা দিল হাসিনা সরকার। তৃণমূল নেত্রী তথা তাঁর দল জয়ের আগে এবং পরে বার বার অভিযোগ করে এসেছেন যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতিকেই প্রচারের অঙ্গ করেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, পশ্চিমবঙ্গে ভোট চলার সময়ে এবং তার আগেও বার বার বাংলাদেশের আবেগকে আঘাত করা হয়েছে বলে কখনও ঘরোয়া ভাবে, কখনও প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ঢাকা। সিএএ-এনআরসি বিতর্কে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশকে এক বন্ধনীতে রাখা, অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে বিজেপির শীর্ষ নেতা অমিত শাহের ধারাবাহিক বিরূপ মন্তব্যকে যে ভাল ভাবে নেয়নি বাংলাদেশ, তা-ও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে প্রকাশ্যেই।
দিন কুড়ি আগে শাহ মন্তব্য করেছিলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন সীমান্ত এলাকায় নিচুতলায় পৌঁছয়নি। সে দেশে গরিব মানুষ খেতে পাচ্ছে না বলেই অনুপ্রবেশ চলছে। শাহের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী প্রকাশ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জ্ঞান অতি সীমিত। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ তাঁর দেশের (ভারতের) থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে।’ বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘বিশ্বে এমন অনেক বুদ্ধিমান লোক রয়েছেন যাঁরা দেখেও দেখেন না, বুঝেও বোঝেন না। উনি (অমিত শাহ) যদি এমন কিছু বলে থাকেন তা হলে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর জ্ঞানগম্যি খুবই সীমাবদ্ধ।’