মহারাষ্ট্রের বোরাটি জঙ্গলের ‘নরখাদক’ বাঘিনি অবনী। ১৩ জনকে সাবাড় করে দেওয়ার অভিযোগ ছিল তার উপর। দু’বছর ধরে তাকে পাকড়াও করার চেষ্টা চলছিল। ধরা পড়েনি অবনী। বহুবার এই মানুষখেকোকে ধরার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে শুক্রবার ইয়াভতমলে অবনীকে গুলি করে মারেন শার্প–শুটার আসগর আলি।
এর আগে প্রশ্ন তুলেছিলেন পশুপ্রেমী বলে পরিচিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধী। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে এবং এমন কার্যকলাপকে ‘নৃশংস’ বলে মন্তব্য করে মহারাষ্ট্র সরকারের বনমন্ত্রীকে বিঁধেছিলেন তিনি। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই গৃহযুদ্ধ বেঁধে গিয়েছে বিজেপির অন্দরে।
পাশাপাশি, গতকাল কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও অবনী–হত্যা নিয়ে সরব হলেন। তার জন্য তিনি আশ্রয় নিলেন মহাত্মা গান্ধীর বাণীতে। কংগ্রেস সভাপতি এদিন গান্ধীর উদ্ধৃতি দিয়ে টুইট করেন, ‘কোনও দেশের গৌরব–মহানুভবতা তৈরি হয় সেই দেশের পশুদের ওপর কেমন আচরণ করা হয় তার ওপর।’
মহারাষ্ট্রের বনমন্ত্রী সুধীর মুনগান্তিওয়ারই অবনীকে হত্যার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ করেছিলেন কেন্দ্রীয় শিশু ও নারীকল্যাণ মন্ত্রী। জবাবে মুনগান্তিওয়ার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, ‘মানেকা গান্ধী যদি মনে করেন মানুষখেকো বাঘকে হত্যা করা উচিত নয়, তাহলে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রকেই নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন যে, ‘মানেকা গান্ধী আমার সঙ্গে কথা বলে মন্তব্য করলে খুশি হতাম। ১৩ জনকে হত্যা করেছে অবনী। জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের নির্দেশিকা মেনে অবনীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই কি প্রথমে অবনীকে বাগে আনার চেষ্টা চালানো হয়েছিল? সূর্যাস্তের পরই কেন অপারেশন চালানো হল? শুটারই বা নিয়োগ করা হল কেন? প্রসঙ্গত, মানুষখেকো অবনীকে ধরতে শতাধিক লোকের একটি টিম তৈরি হয়। ছিল ১০০ ক্যামেরা, ড্রোন। ৬ বছরের অবনীর ১০ মাসের দুটি শাবকও রয়েছে। সেই শাবকদুটির এখন কী হবে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
সূত্রের খবর, অবনীর শরীরে ঘুম পাড়ানোর ওষুধ দেওয়ার যে ডার্ট, তার ক্ষত রয়েছে। কিন্তু সেটা দূর থেকে ছোঁড়া হয়নি। দেখে মনে হচ্ছে কেউ হাতে করে সেটা অবনীর শরীরে বিঁধে দিয়েছে। গুলি করে মারার পরে। অর্থাৎ ঠান্ডা মাথায় বাঘিনিটিকে মারা হয়েছে। ফরেনসিক এবং ব্যালিস্টিক পরীক্ষায় সেটা প্রমাণ হতে পারে।