প্রযুক্তি শিক্ষা যে প্রধান কয়েকটি মৌলিক বিষয়ের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে, তার মধ্যে গণিত এবং পদার্থবিদ্যা অন্যতম দুই প্রধান স্তম্ভ। এমনটাই মত শিক্ষা-বিশেষজ্ঞদের। অথচ অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশনের (এআইসিটিই) নতুন সিদ্ধান্তে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে গণিত ও পদার্থবিদ্যার পাঠ নেওয়া আর বাধ্যতামূলক থাকছে না! এআইসিটিই এই হাস্যকর সিদ্ধান্তে শিক্ষামহলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
দ্বাদশ শ্রেণির পরে বিই, বি-টেক কোর্সগুলিতে ভর্তির জন্য এত দিন গণিত, পদার্থবিদ্যা ও রসায়ন আবশ্যিক ছিল। এআইসিটিই-র নয়া নির্দেশ অনুযায়ী ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, জীববিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রনিক্স, জৈব প্রযুক্তি, কৃষিবিজ্ঞান, বিজনেস স্টাডিজ, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো ১২টি বিষয়ের মধ্যে যে-কোনও তিনটি বেছে নিতে হবে পড়ুয়াদের।
শিক্ষকদের বক্তব্য, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গেলে দ্বাদশ শ্রেণির স্তরের গণিত ও পদার্থবিদ্যার ভিত শক্ত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ সেই দু’টি বিষয়ই যদি কেউ না-নেন, তাহলে তাঁরা কী ভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বেন? ভবিষ্যতেই বা তাঁরা কেমন ইঞ্জিনিয়ার হবেন- প্রশ্ন তুলছে শিক্ষা মহল। এআইসিটিই জানিয়েছে, যে-সব পড়ুয়া গণিতে দুর্বল, তাঁদের জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে গণিতের একটি ব্রিজ কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু এই ব্রিজ কোর্স আদৌ দ্বাদশ শ্রেণির গণিত পাঠ্যক্রমের বিকল্প হতে পারে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও।
এআইসিটিই-র চেয়ারপার্সন অনিল সহস্রবুদ্ধে আজ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গণিত ও পদার্থবিদ্যা ঐচ্ছিক করে দেওয়া হয়েছে, এমন নয়। আসলে তিনটি আবশ্যিক বিষয় বেছে নেওয়ার জন্য আরও বেশি বিকল্প রাখা হয়েছে। ফলে বিভিন্ন বিষয়ের পড়ুয়ারা আলাদা আলাদা আবশ্যিক বিষয় বাছতে পারবেন। তিনি আরও জানান, যাঁদের দ্বাদশ শ্রেণিতে গণিত ছিল না, তাঁরা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইলে প্রথম বর্ষে অনেক বেশি গণিত পড়তে হবে। তাঁর দাবি, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির ৫+৩+৩+৪ পদ্ধতির (যেখানে আলাদা করে বিজ্ঞান, শিল্পকলা ও বাণিজ্য শাখা থাকবে না) সঙ্গে এই নীতি সামঞ্জস্যপূর্ণ। ফলে যে-কোনও ছাত্র বা ছাত্রীই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবেন।