আজ, ১৪ মার্চ ‘নন্দীগ্রাম দিবস’। দীর্ঘ ১৪ বছর আগে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষার জন্য যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন নন্দীগ্রামের সংগ্রামী কৃষকরা, তা দমন করতে ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকারের পুলিশ। যেই ঘটনায় শহীদ হয়েছিলেন ১৪ জন। রাজ্য রাজনীতির সেই ‘রক্তাক্ত অধ্যায়’-এর ১৪ বছর পূর্তিকে স্মরণে রেখে আজ দুপুরে কলকাতায় মিছিল করবে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। মেয়ো রোডের গান্ধীমূর্তির পাদদেশ থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত ওই মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, হাজরায় মিছিল শেষের পর সেই জমায়েতে অংশ নিতে চেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সম্প্রতি নন্দীগ্রামেই আহত হওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুইল চেয়ারে বসেই মমতা সেখানে যাবেন। নির্বাচনী প্রচার পর্বে ‘দিশা’ দেবেন কর্মী-সমর্থকদের। উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে মারাত্মক দুর্ঘটনায় জখম হওয়া মমতাকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তৃণমূল সুপ্রিমো আর এক মুহূর্ত নষ্ট করতে চাইছেন না।
আগামীকাল তৃণমূল সুপ্রিমো বক্তব্য রাখবেন পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডি বিধানসভার ঝালদা এবং বলরামপুর বিধানসভার রথতলা এলাকায় দু’টি নির্বাচনী প্রচার সভায়। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার শালতোড়া, ছাতনা এবং রাইপুরে নির্বাচনী সভাতেও অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। এরপর বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ও লালগড়ে আরও দু’টি নির্বাচনী সভার প্রধান বক্তা মমতা। সভামঞ্চে হুইল চেয়ারে বসেই ভাষণ দেবেন তিনি।
এদিকে সূত্রের খবর, রাজনৈতিক মহলে চর্চা থাকলেও, আজ তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশিত হচ্ছে না। তবে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, পরিকাঠামো উন্নয়ন, খাদ্য সরবরাহ এবং কর্মসংস্থানের মতো বিষয়গুলি যে জোড়াফুল শিবিরের ইস্তাহারে প্রাধান্য পাচ্ছে, তা জানা গিয়েছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয়টি হল, মাসিক রেশন সামগ্রীর ‘ফ্রি হোম ডেলিভারি’। কোনও গ্রাহককে আর রেশন দোকানে যেতে হবে না। এরই পাশাপাশি নন্দীগ্রামে কৃষি আন্দোলনের শহীদদের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রতিশ্রুতিও থাকছে তৃণমূলের ইস্তাহারে। থাকছে নন্দীগ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৫৪টি দেবালয়-মন্দির ঘিরে ‘ট্যুরিজম সার্কিটের’ কথাও।
তৃণমূল সূত্রে খবর মিলেছে, নিজের আবেগের জায়গা নন্দীগ্রাম এবং তার ঐতিহাসিক কৃষি আন্দোলনের রক্তঝরা দিনটিতে জখম অবস্থাতেই অংশ নিতে চাইছেন দলনেত্রী। হাজরা মোড়ের জমায়েতে অংশ নিয়ে এবং বক্তৃতা দিয়ে জোড়াফুল শিবিরের নন্দীগ্রামের প্রার্থী নিজের সেই আবেগকেই বঙ্গবাসীর সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাইছেন। প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ের ভোট আগামী ২৭ মার্চ। ভোট রয়েছে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এবং দুই মেদিনীপুরের মোট ৩০টি আসনে। আর সেই লক্ষ্যে, আজ নন্দীগ্রাম দিবসের দিন থেকেই জোরকদমে প্রচারে নামতে চাইছেন তিনি।