গত অক্টোবর থেকেই একটানা মুদ্রাস্ফীতির জেরে খাদ্যপণ্য থেকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য, অগ্নিমূল্য হয়েছে প্রতিটা জিনিসই। এরই মধ্যে সপ্তাহ দুয়েকেরও কম সময়ের ব্যবধানে দু’বার দাম বেড়েছে ১৪.২ কেজি ওজনের এলপিজি সিলিন্ডারের। এবং প্রতিবারই ৫০ টাকা করে। কিন্তু ভর্তুকির পরিমাণ রয়ে গিয়েছে সেই ১৯ টাকাতেই। এ ভাবে রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপের প্রায় কাছাকাছি চলে এল কেন্দ্রের মোদী সরকার?
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতায় ভর্তুকিহীন ১৪.২ কেজি ওজনের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ৮৯৬ টাকা। আবার মে মাসে সেই দাম বেড়ে গিয়ে হয়েছিল ৯২৮ টাকা। কিন্তু এর অর্ধেকেরও কিছু বেশি পরিমাণ টাকা ভরতুকি বাবদ পেয়েছিলেন গ্রাহক। সাধারণ মানুষ তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি বাবদ পেয়েছিলেন ৫১৪ টাকা। এমনকী চলতি বছরের এপ্রিল মাসেও রান্নার গ্যাস বাবদ সাধারণ মানুষ ভরতুকি পেয়েছিলেন ১৮৯.৫০ টাকা। তখন ১৪.২ কেজির ভর্তুকিহীন এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ছিল ৭৭৪.৫০ টাকা।
তুলনামূলক ভাবে বিচার করলে দেখা যাচ্ছে, এখন ভর্তুকিযুক্ত রান্নার গ্যাসের দাম ৬৭০ টাকা, আর ভর্তুকি মিলছে মাত্র ১৯.৫৮ টাকা। আশ্চর্যজনক ভাবে গত নভেম্বর মাসে ভর্তুকিহীন এলপিজি সিলিন্ডারের দাম যখন ৬২০.৫০ টাকা ছিল, তখনও ভর্তুকি বাবদ গ্রাহক পেয়েছেন এই সাড়ে ১৯ টাকা। আর এখন দাম বেড়ে গেলেও বাড়ানো হয়নি ভর্তুকির পরিমাণ। ভর্তুকিযুক্ত এলপিজি সিলিন্ডারের দাম গত ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ছিল ৪৯৪.৩৫ টাকা। সেখান থেকে বেড়ে এ বছরের জুলাইয়ে তা ৫৯৪ টাকায় দাঁড়ায়।
ঘরোয়া সিলিন্ডারের দাম অবশ্য তখন থেকেই অপরিবর্তিত রয়েছে। এর থেকে একটা বিষয়ই স্পষ্ট হচ্ছে, অপরিশোধিত এলপিজি সস্তা হওয়া সত্ত্বেও এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনতে আনতে সরকার কার্যত ভর্তুকিই তুলে দিতে চাইছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি খোদ তেল মন্ত্রক জানায়, গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এ বছরের জুলাইয়ে ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম ৪৯৪.৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫৯৪ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ একজন গ্রাহকের ভর্তুকির টাকা গত এক বছরে প্রায় ১০০ টাকা কমেই গিয়েছে।