এত সুন্দর চিত্রনাট্য কেউ কি কখনো লিখতে পেরেছেন?
ওভালে কুক খেলতে নেমেছিলেন তাঁর জীবনের শেষ টেস্টে। শেষ টেস্টে, শেষ ইনিংস যত সুন্দরভাবে রাঙিয়ে রাখা যায়, সেটিই করেছিলেন ইংলিশ ওপেনার।প্রথম ইনিংসে ৭১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেন। ওভাল টেস্টের নায়ক অ্যালিস্টার কুককে জয় উপহার না দিতে পারলে বড় বেমানান হতো। নিয়তি সেটি হতে দেয়নি। লোকেশ রাহুল-ঋষভ পন্তের লড়াইয়ের পরও ম্যাচটা শেষমেশ ইংল্যান্ডই জিতেছে ১১৮ রানে।
ভারতের বিপক্ষেই ২০০৬ সালের মার্চে নাগপুরে টেস্ট অভিষেক হয়। অভিষেকেও করেছিলেন সেঞ্চুরি। কী মিল দেখুন, ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ফিফটি, দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি। শেষ টেষ্টেও তা-ই! জীবনের প্রথম ও শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করা মাত্র পঞ্চম ব্যাটসম্যান কুক।
এ তালিকায় প্রথম ব্যাটসম্যান অস্ট্রেলিয়ার রেজিনাল্ড ডাফ, শেষ টেস্টটি তিনি খেলেছেন ১৯০৫ সালে। তালিকায় দ্বিতীয় নামটি অস্ট্রেলিয়ারই উইলিয়াম পন্ফোসর্ড। তৃতীয়টি ১৯৮৪ সালে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলা গ্রেগ চ্যাপেল। তিন অস্ট্রেলীয়র পর এ রেকর্ডটি মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের, প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক যদিও কুকের মতো ঘটা করে বিদায় জানাতে পারেননি। ঘটনাক্রমে ২০০০ সালের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা বেঙ্গালুরু টেস্টই তাঁর শেষ টেস্ট হয়ে আছে, যেটির দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিলেন ১০২ রান। ১৮ বছর পর এই বিরল রেকর্ডে নাম তুললেন কুক।
ওভাল টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ, কুক আরও একবার ভাসলেন করতালির বৃষ্টিতে। টুপি খুলে অভিনন্দনের জবাব দিলেন প্রাক্তন ইংলিশ অধিনায়ক। এভাবে তো আর মাঠে নামা হবে না। আবেগঘন মুহূর্তে কুক পাশে টেনে নিয়েছিলেন জেমস অ্যান্ডারসনকে। দুর্দান্ত এক রেকর্ড গড়েছেন জিমি। ভারতের শেষ উইকেট মোহাম্মদ শামির স্ট্যাম্প উপড়ে শুধু দলের জয়ই নিশ্চিত করেননি, গ্লেন ম্যাকগ্রাকে টপকে ৫৬৪ উইকেট নিয়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি পেসারও হয়ে গেছেন।
জয়ই হতো বিদায়ী ম্যাচে কুকের সেরা উপহার। তিনি সেটা পেয়েছেন। তৃপ্তির হাসি নিয়ে শেষ হলো তাঁর পথচলা।