এটার সঙ্গে ওটা মানায় না। ওটার সঙ্গে এটা পরতেই হবে।না হলেই মহাভারত অশুদ্ধ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। মরাল পুলিশের মতো ফ্যাশন পুলিশের দৌরাত্ম্যে জেরবার। কেবলই কানের কাছে কপচে যায় নানা ফ্যাশন-নীতি। কিন্তু ওই যে কথায় আছে না নিয়ম ভাঙার জন্যই নিয়ম গড়া হয়। কথাটা কিন্তু ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও খাটে। এরকমই কয়েকটা ফ্যাশন মিথ ভেঙে তৈরি হয়েছে নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ড। যাতে নিয়মের বাইরে নির্দ্বিধায় আপনি তৈরি করতে পারেন আপনার নিজস্ব ফ্যাশন স্টেটমেন্ট।
প্রিন্টের সঙ্গে নাকি প্রিন্ট পরা যাবেনা? নিশ্চয় যাবে। যারা বলেন দুটো প্রিন্টেড পোশাক একসঙ্গে টিম আপ করা যাবেনা তাঁদের শুনিয়ে দিন প্রিন্ট অন প্রিন্ট ফ্যাশন ট্রেন্ডের কথা। তবে মাথায় রাখবেন দুটো প্রিন্টের মধ্যে যেন সামঞ্জস্য বজায় থাকে। মানে একটা বড় বা বোল্ড প্রিন্ট হলে অন্যটা ছোট প্রিন্ট। একটা শাটল নিট লুক বজায় রাখাটা জরুরি। আবার এক বা কাছাকাছি রঙের দুটো প্রিন্টেড পোশাকও খারাপ লাগবেনা। আবার প্রিন্টেড পোশাকের সঙ্গে প্রিন্টেড অ্যাক্সেসরি যোগ করে তৈরি করা যায় নতুন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট।
ডেনিম পরলে তার সঙ্গে আর অন্য কোনও ডেনিমের পোশাক পরা যায়না। একটা সময় ফ্যাশন দুনিয়ায় এই ট্রেন্ডটাই চলত। সময় বদলেছে। একবার সঙ্গের ছবির দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখুনতো। একটুও খারাপ লাগছে কি? কনট্রাস্ট রঙের ডেনিম টিম আপ করলে এই ফ্যাশন স্টেটমেন্ট জমবে ভালো।
দুটো একরঙা বোল্ড পোশাক পরলে ওভার দ্য টপ লাগবে। তাই এই ফ্যাশন স্টেটমেন্টের পাশে একটা বড়ো করে ক্রস এঁকে দেওয়া হতো। কিন্তু বুদ্ধি করে পোশাক টিম আপ করলে ওভার দ্য টপ দুরের কথা, আপনি হয়ে উঠবেন যথার্থ ফ্যাশন ডিভা। যদি কোন রঙের সঙ্গে কোন রঙ মানাবে, তা নিয়ে সংশয়ে ভোগেন, তাহলে বলবো কাছাকাছি দুটো রঙ বাছুন। অথবা কনট্রাস্ট রঙ। ফ্যাশন ফোপা হওয়ার সম্ভাবনাই নেই।
দিনের বেলায় গ্লিটারি কোনও পোশাক পরে বেরোলেই অনেকেই আপনার ফ্যাশন সচেতনতা নিয়ে মুচকি হাসতে পারেন। পাত্তা দেবেন না। স্পার্কল, গ্লিটার, সিকুইন, এসবই রাতেরই ফ্যাশন স্টেটমেন্ট এমন মাথার দিব্যি কেউ দেয়নি। গ্লিটারি পোশাক নিউট্রাল টোনড কোনও পোশাকের সঙ্গে টিম আপ করুন।অ্যাক্সেসরির বাহুল্য না থাকাই ভালো।
স্কার্টের সঙ্গে স্নিকারস পরা যাবে কিনা তাই নিয়ে বেশ একটা ধন্দ ছিলো ফ্যাশন দুনিয়ায়। এখন কিন্তু ফ্যাশনিস্তারা স্কার্টের সঙ্গে স্নিকারস টিম আপ করছেন। বিশেষ করে পপ কালারের স্নিকারস বা ডিজাইনার স্নিকারসের সঙ্গে স্কার্ট টিম আপ করে ওম্যানিয়া স্টাইল স্টেটমেন্ট করে নজর কাড়ছেন সাজ-সন্ধানীরা।
ব্যাগ আর জুতো – দুটোই খুব গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকসেসরি। একটার সঙ্গে অন্যটার রঙ মিলিয়ে সাজ সবসময়ে সম্ভব নয়। দরকারও নেই। এক্সপেরিমেন্ট করাই যায়। শুধু খেয়াল রাখতে হবে আপনার সামগ্রিক লুকের সঙ্গে যেন আপনার ব্যাগ আর জুতো মানানসই হয়।
কালো আর বাদামী এই দুই রঙমিলান্তি নিয়েও ফ্যাশন মহলে একটু নাকউঁচু ভাব আছে। বাদামী জ্যাকেট বা অ্যাকসরি দিয়ে কালো রঙের পোশাক স্টাইলাইজ করা যায়। বাদামী হ্যাট কালো রঙের পোশাকের সঙ্গে টিম আপ করে দেখতে পারেন। বা একটা বাদামী রঙের টোট ব্যাগ।
অল ব্ল্যাক লুকও প্রচলিত ফ্যাশন লুকবুকে ব্রাত্য। এটা গথিক ফ্যাশন স্টেটমেন্ট অন্তর্গত যা সব সময় মানায় না। ভেবে দেখুন কালো রঙের পোশাক পরলে একটা স্লিক আর শার্প লুক যোগ হয় কিনা। তাই একটা ওয়েল ফিটেড ব্ল্যাক ড্রেসের সঙ্গে টিম আপ করাই যায় ওই একই রঙের জুতো ব্যাগ অ্যাক্সেসরি।
গয়না পরার সময় অনেক সময় ইচ্ছে হয় যে সোনালি ব্যাঙ্গেলসের সঙ্গে রুপোলি বা ব্ল্যাক মেটালের ব্যাঙ্গেলসগুলোও মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে নিতে? করতেই পারেন। কারণ এটাই ফ্যাশন ট্রেন্ড। ডুয়াল টোনড ট্রেন্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন মহল রীতিমত সরগরম। একই রকমের ধাতুর গয়না পরা এখন পুরনো ফ্যাশন ট্রেন্ড।
কানের গয়না ভারী হলে গলায় কিছু পরার দরকার নেই। বড়োজোর হালকা কিছু। অথচ আয়নায় দুটো একসঙ্গে পরে দেখছেন আপনাকে দিব্যি লাগছে। ক্যারি করতে পারলে নিশ্চয় পরবেন। কুছ পরোয়া নেই।
তবে স্টেটমেন্ট জুয়েলারি হলে একটু সতর্ক থাকতে হবে। বাকি গয়না যেন আপনার স্টেটমেন্ট জুয়েলারিকে ছাপিয়ে না যায়।