মোদী সরকারের আনা ‘আচ্ছে দিনে’ প্রথম থেকেই ধুঁকছে বিএসএনএল। দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থা চলছে এই রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম সংস্থার। আর এর কারণ হিসেবে দেশের টেলিকম, বিশেষ করে মোবাইল পরিষেবায় রাষ্ট্রায়ত্ত বিএসএনএলের চেয়ে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বারবার। এ বার ৪জি পরিষেবা চালুর যন্ত্রাংশ কেনা নিয়েও বৈষম্যের অভিযোগ তুলল কর্মী ও অফিসারদের যৌথ সংগঠন অল ইউনিয়ন্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েশন্স অব বিএসএনএল (এইউএবি)।
সম্প্রতি লাদাখ সংঘর্ষের আবহে বিএসএনএলকে এ দেশের সংস্থার থেকেই যন্ত্রাংশ কিনতে নির্দেশ দিয়েছে টেলিকম দফতর (ডট)। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে তেমন নির্দেশ নেই। কূটনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য না করলেও, এইউএবির দাবি, একই প্রয়োজনে বেসরকারি সংস্থা ও বিএসএনএলের মধ্যে এভাবে বৈষম্য করা যাবে না। এ নিয়ে টেলিকম সচিব অংশু প্রকাশ ও বিএসএনএল কর্তা পি কে পুরওয়ারকে চিঠি দিয়েছে তারা। স্থায়ী ও ঠিকা কর্মীদের বকেয়া বেতন, চিকিৎসার আর্থিক সুবিধা-সহ নানা দাবির পাশাপাশি ৪জি নিয়েও বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করবে এইউএবি। প্রতিবাদে সরব হবে টুইটারেও।
প্রসঙ্গত, পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবেই বিএসএনএলের দ্রুত ৪জি পরিষেবা আনার কথা। এ জন্য তারা যন্ত্রাংশের দরপত্র চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরুও করেছিল। কিন্তু লাদাখ আবহে চীনকে বয়কট করতে সেই প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। নতুন দরপত্রে দেশীয় সংস্থার থেকেই যন্ত্রাংশ কেনায় জোর দিতে বলেছে কেন্দ্র। সূত্রের খবর, চীনা সংস্থা জেডটিই ও হুয়েইয়ের পাশাপাশি ভারতে টেলি সংস্থাগুলিকে যন্ত্রাংশ জোগায় নোকিয়া, এরিকসন, স্যামসাং। কারণ উন্নত পরিষেবা দেওয়ার মতো উপযুক্ত দেশীয় যন্ত্রাংশ এখনও বহু ক্ষেত্রে অমিল। তাই এ বিষয়ে বিদেশিদের ওপর নির্ভর করতে হয়।
চীনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষের পরে বেসরকারি টেলিকম সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআই বলেছিল, ভূ-রাজনৈতিক বিষয়কে ব্যবসার সঙ্গে গুলিয়ে না ফেলাই মঙ্গল। কারণ, ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত হয় গ্রাহক ও অংশীদারদের স্বার্থ রক্ষার্থে। ঠিক এই যুক্তিতেই অসন্তোষ বাড়ছে বিএসএনএল কর্মীদের মধ্যে। তাদের তোপ, বেসরকারি সংস্থাগুলি যখন গোটা দেশে হইহই করে ৪জি দিচ্ছে, তখন ওই নতুন নির্দেশে বিএসএনএলের ৪জি আনতেই আরও দেরি হবে। ফলে প্রতিযোগিতায় আরও পিছিয়ে পড়বে সংস্থা।