একদম শেষমুহূর্তে পিছিয়ে দেওয়া হল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি ও তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে একটা রফা সূত্র খুঁজে পাবেন এমন আর কোনও আশা নেই বলেই গতকালের পূর্বনির্ধারিত স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকটি বাতিল করা হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গত মঙ্গলবার বিকেলে ওলির সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছিলেন যে, প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর থাকাটা নেপালের স্বার্থের পক্ষে ক্ষতিকারক। তার উত্তরে ওলি কোনও ধোঁয়াশা না রেখেই বলে দিয়েছেন তিনি কোনওভাবেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন না। এমনকি দলের যুগ্ম চেয়ারম্যানের পদও যে তিনি আঁকড়ে থাকবেন সেকথাও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন তিনি।
মঙ্গলবার এই দুই পক্ষের বৈঠকে প্রাপ্তি ছিল শুধু বুধবারের স্ট্যান্ডিড কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে ওলিকে রাজি করানো। ৪৫ সদস্যের সর্বোচ্চ কমিটির ৩০ জন সদস্যই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে কেপি শর্মাকে অপসারণের পক্ষে মত দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পর্যবেক্ষকদের অভিমত, কোনও অবস্থাতেই যে ওলিকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে রাজি করানো যাবে না সেটা বুঝেই স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকটি বাতিল করা হয়। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ওলি যে পার্টি ভেঙে দিতেও পিছপা হবেন না সেটাও তিনি ঘোষণা করে দিয়েছেন। ২০১৮ সালে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির দুই শাখা, মার্কসবাদী–লেনিনবাদী ও মাওবাদী সেন্টার একত্রিত হয়ে তৈরি হয় নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি।
এদিকে ওলি’র পদ বাঁচাতে সরাসরি নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নেমে পড়েছে তাদের প্রতিবেশী চীনও। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি’র তোয়াক্কা না করেই নেপালে চীনের রাষ্ট্রদূত হোউ ইয়ানকি ওলি বিরোধীদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নেপালের দেশীয় রাজনীতি নিয়ে বেজিংয়ের এই অতি সক্রিয়তা দেশে এবং দেশের বাইরে চূড়ান্ত সমালোচিত হলেও চীনের তাতে বিশেষ হেলদোল নেই। দলের মধ্যে কোণঠাসা ওলি ভারতের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ নেপালের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে উগ্র জাতীয়াতাবাদের হাওয়া তৈরি করলেও দলে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। যদিও ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক তিক্ত করে দেওয়া ওলিকে রক্ষা করতে সক্রিয়তা দেখিয়েই চলেছে বেজিং।