সোশ্যাল মিডিয়া সে দেশে রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে৷ বাকস্বাধীনতায় তালা দেওয়া বহু দিন আগে থেকেই৷ পাছে সরকারের রোষানলে পড়তে হয়, তাই সরকার নিয়ন্ত্রিত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সবাই ভারত-বিরোধী পোস্টে ব্যস্ত৷ কিন্তু চীনের বাতাসে কান পাতলে অন্য ফিসফিস শোনা যাচ্ছে৷ সেটি হল, চীনা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ৷ গালওয়ান ভ্যালিতে ভারতের বিরুদ্ধে চীনের পদক্ষেপে চিন সরকারের উপর ক্ষুব্ধ একটি বড় অংশের চীনা বংশোদ্ভূতরাও৷
চীন সরকার বিরোধী ৭৫ হাজারের বেশি পোস্ট বাছাই করেছে সাইবার সিকিউরিটি ও সেন্টিমেন্ট অ্যানালিসিস সংস্থা ‘সেকল্যাবস অ্যান্ড সিস্টেম’৷ সংস্থার সিইও সরাঙ্গধর একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, চীনা সরকারের বিরোধী মনোভাব দেখা গিয়েছে সেই চীনা নাগরিকদের মধ্যেও, যাঁরা চীন সরকার সমর্থিত বিভিন্ন থিঙ্ক ট্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত৷ এটা অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ৷ যেখানে চীন সরকার দেশের নাগরিকদের সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভিটি নিয়ন্ত্রণ করে ও নজরে রাখে৷
কী রকম বিরোধিতা? সরাঙ্গধর জানাচ্ছেন, ‘বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রথম গোষ্ঠীটি হল চীনা ডায়াসপোরা সাংবাদিকরা৷ যাঁরা চীন সরকারের সীমান্ত ইস্যু নিয়ে পদক্ষেপে খুশি নন৷ এই গোটা ঘটনায় তৃতীয় একটি পার্টির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তাঁরা মনে করছেন৷’ একই সঙ্গে হংকং ও তাইওয়ানের গণতন্ত্রের পক্ষের কর্মী ও সমর্থকরাও চীন সরকারের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন৷
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রয়েছেন ডেং ইউয়েন ও হু পিং৷ ডেং ইউয়েনের টুইটারে ফলোয়ারের সংখ্যা ৩৪ হাজারের বেশি৷ তিনি একজন চীনা সংবাদিক৷ তিনি চাইনিজ কুওমিনতাং-এর রেভোলিউনারি কমিটিরও সদস্য৷ হু পিং-এর টুইটারে ২ লক্ষ ২১ হাজারের বেশি ফলোয়ার৷ ভারতের সঙ্গে চীনের সীমান্ত নিয়ে তৈরি হওয়া বিবাদকে লিখেছেন, চীন নেতৃত্বের দুর্বল দিকটাই ফুটে উঠল৷ হু পিং-ও তা-ই মনে করছেন৷ ইউয়েনের বিশ্বাস, ভারত ও চীনের যুদ্ধ যদি অতীতে অসম্ভব মনে হত, এখন সেই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷
এঁরা ছাড়াও চীন থেকে বেশ কিছু টুইটে দেশের অভ্যন্তরীণ বিবাদের চিত্র নিয়ে আলোচনা চলছে৷ ওয়াং খিয়ানখিয়ান নামে এক চীনা নাগরিকের টুইট, ‘চীনের অভ্যন্তরীণ বিবাদ নিয়ে গুজব চলছেই৷ এমনকী এও শোনা যাচ্ছে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরীণ বৈঠকেও গোলমাল চলছে৷ নতুন ও পুরনো পন্থিদের মধ্যে৷’
এরকম বহু পোস্টে দেখা গিয়েছে, চীনের নাগরিকরাই চিন সরকারের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ৷ ভারতের সঙ্গে এই বিবাদ তাঁরা মোটেই পছন্দ করছেন না৷