রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দেওয়া হিসেবকে পুঁজি করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরেই নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশ্যে তোপ দাগলেন রাহুল গান্ধী। নয়া দিল্লিতে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, নোটবন্দির ফলে শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদীর বন্ধুরাই লাভবান হয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিমুদ্রাকরণ করেছিলেন শুধু তাঁর ১৫ থেকে ২০ জন পুঁজিপতি বন্ধুর লাভের উদ্দেশ্য। নোটবন্দির সেটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রীর সেই ব্যবসায়ী বন্ধুরা নোটবন্দীর সুযোগ নিয়ে কালো টাকা সাদা করে নিয়েছেন। নোটবন্দী আসলে আর্থিক কেলেঙ্কারি’।
নোটবাতিলের পুরো আইডিয়াকেই উপহাস করেছেন কংগ্রেস প্রধান। এর ফলে অর্থনীতি ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে বলে মত তাঁর। রাহুল বলেন, ‘এই বিমুদ্রাকরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে দেশের যুবকদের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। নোটবন্দীর ফলেই জিডিপি-র হার ২ শতাংশ কমেছে, কোটি কোটি চাকরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’।
বিমুদ্রাকরণকে হাতিয়ার করে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকেও একহাত নিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি। রাহুলের অভিযোগ, অমিত শাহ গুজরাটের যে ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান, নোটবন্দীর সময় সেই ব্যাঙ্কে ৭০০ কোটি টাকার বাতিল নোট জমা পড়েছিল।
সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের বার্ষিক রিপোর্টে জানিয়েছে, পুরনো ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোটের ৯৯.৩ শতাংশ ব্যঙ্কিং ব্যবস্থায় ফেরত এসেছে। যার মোট মূল্য ১৫.৩১ লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৬ সালের নভেম্বরের ৮ তারিখ, বিমুদ্রাকরণ লাগুর দিন বাজারে ৫০০ ও ১০০০ টাকার যে নোট বাজারে ছিল, তার মূল্য ছিল ১৫,৪১৭ লক্ষ কোটি টাকা। কংগ্রেস সভাপতির আশঙ্কা, ভবিষ্যতে নোটবন্দী নিয়ে আরও দূর্ণীতি সামনে আসবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে রাফাল চুক্তি নিয়েও মোদীর বিরুদ্ধে সুর চড়ান রাহুল। প্রশ্ন তোলেন, যুদ্ধবিমান তৈরিতে আনকোরা রিলায়েন্সকে দায়িত্ব দেওয়া হল? তাঁর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী ফ্রান্স সফরে গিয়ে রাফাল চুক্তি ঘোষণার মাত্র ১২ দিন আগে তৈরি করা হয়েছিল অনিল আম্বানির রিলায়েন্স ডিফেন্স লিমিটেড। সেদিন পর্যন্ত তাদের হাতে যুদ্ধবিমান তৈরির লাইসেন্সও ছিল না। অথচ, সরকারি সংস্থা ‘হিন্দুস্থান অ্যারোনেটিক্স লিমিটেড’কে বাতিল করে রাতারাতি রিলায়েন্সকেই ৩০ হাজার কোটির চুক্তি পাইয়ে দিয়েছে মোদি সরকার। পাশপাশি রাফালে দুর্নীতি নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জয়েন্ট পার্লামেন্ট্রি কমিটি গঠনের সময়সীমা বেঁধে দেন মোদী সরকারকে।