এর আগে বিরোধীদের সুরেই পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিল তারা। এবার ফের মোদী-শাহের দলের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়াল আরএসএস অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। গত ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রকের থেকে জারি হওয়া একটি নির্দেশিকাকে কেন্দ্র করে এই সঙ্ঘাত বাঁধে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওই নির্দেশিকায় বিড়ির প্যাকেটের গায়ে সচিত্র সতর্কীকরণ ছাপানো বাধ্যতামূলক বলে ঘোষণা করা হয়। চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সচিত্র সতর্কীকরণের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক বিরজেশ উপাধ্যায় এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, কেন্দ্রের এই ঘোষণা বিড়ি শিল্পের ওপর একটি ‘বিশাল আঘাত’। বিবৃতিতে আরও বলা হয় এই শিল্পের ওপর সরকার ক্রমাগত আক্রমণ শানাচ্ছে। ‘বিড়ি শিল্পকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকারের ভারসাম্যহীন নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিক্ষোভ দেখানোর সময় হয়েছে। এই শিল্পের ওপর সাড়ে চার কোটি মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। (এই নীতির ফলে) গ্রাম ও শহরের লক্ষ লক্ষ দরিদ্র মানুষের জীবিকা বিপন্ন হবে’ বলে জানান উপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, এই প্রথম ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের সঙ্গে শাসকদলের সংঘাত প্রকাশ্যে এল এমন নয়। এর আগে উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা-সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে শ্রম আইন বদলের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল এই শ্রমিক সংগঠন। বিড়ির প্যাকেটে সচিত্র সতর্কবার্তা দেওয়ার ঘোষণা আসলে তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী বৃহৎ সংস্থাদের সুবিধা করার জন্য- এমনই অভিযোগ তুলে উপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যম দ্য প্রিন্ট-কে জানান, বিড়ির প্যাকেটে সচিত্র সতর্কবার্তা দিলে আর অন্য কোনও লেখা দেওয়ার জায়গা থাকবে না। আর বিড়ি কিনতে লোককে নিরুৎসাহ করলে এই শিল্পে অবশ্যম্ভাবী সংকট তৈরি হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত অসময়ে ঘোষিত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন উপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘সাড়ে চার কোটির বেশি মানুষ এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। অভূতপূর্ব অতিমারীর ধাক্কায় ইতিমধ্যেই গ্রামীণ এবং ছোট শিল্প ক্ষেত্রে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এই সময়ে ২০০৩ সালের সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য আইনের সংশোধন করা সম্পূর্ণ অসময়পোযোগী সিদ্ধান্ত।’ লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকার কথা না ভেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের জারি করা এই নির্দেশকে ‘অপরিণত’ সিদ্ধান্ত এবং এর ফলে এই শ্রেণীর সমস্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলেই দাবি করেছেন তিনি।