তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই গোটা চমকে দিয়ে নিজের প্রিয়পাত্র তথা বহু যুদ্ধের সেনাপতি অমিত শাহর হাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তারপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে অন্তত দু’টি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমটি সংবিধানের ৩৭০ ধারা এবং ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বিলোপ। এবং দ্বিতীয়টি
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সরকারের একবছর পূর্তির অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক যে সাফল্যের খতিয়ান দিতে চলেছে, তাতে প্রথমটিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হলেও দ্বিতীয়টির উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় মোদী সরকারের অন্যতম বড় সিদ্ধান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করা। গত বছর ৫ আগস্ট নতুন আইন এনে জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া ৩৭০ ধারা ও সংবিধানের ৩৫-এ অনুচ্ছেদ বাতিল করে কেন্দ্র। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে নিজেদের সাফল্যের খাতায় সবার উপরে রেখেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে করোনা মোকাবিলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ভূমিকা, উম্পুন, বুলবুলের মতো ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় নিরাপত্তারক্ষীদের সাফল্যের কাহিনী। বাদ শুধু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সবচেয়ে চর্চিত এবং বিতর্কিত সিদ্ধান্ত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস। যা নিয়ে জোর বিতর্ক হয়েছে দেশজুড়ে।
উল্লেখ্য, এনআরসি আতঙ্কের মধ্যেই ১১ ডিসেম্বর সংসদে পাশ হয়ে যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। পরে তা রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর আইনেও পরিণত হয়। এই আইন অনুযায়ী ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার যে সমস্ত শরণার্থীরা ভারতে এসেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তবে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন এবং পার্সি- এই ছ’টি ধর্ম এর আওতায় এলেও মুসলিমদের বাদ রাখা হয়। যার ফলে বিল পাশ হতেই একে অসাংবিধানিক ও ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টিকারী আখ্যা দেয় বিরোধীরা। দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ। যার আঁচ করোনা ভাইরাসের আগমনের আগে পর্যন্ত ছিল গনগনে। সম্ভবত সেই বিতর্ক এড়াতেই নিজেদের সাফল্য হিসেবে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন তুলে ধরেনি অমিত শাহর মন্ত্রক।