ভারতের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই মুহূর্তে যার প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি, বিশ্ব জুড়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসের ভয়ঙ্কর সংক্রমণ ও অতিমারির জেরে, সেই বিদেশি লগ্নি এ বার মুখ ঘোরাতে শুরু করেছে। মাসপাঁচেকের সঙ্কটেই ভারতের শেয়ার বাজার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলারেরও বেশি বিদেশি লগ্নি। একই বিপদ ঘনিয়ে এসেছে এশিয়ার অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলির উপরেও। ভারত বাদে এশিয়ার অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের শেয়ার বাজার থেকে ইতিমধ্যেই মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে আরও ১ হাজার কোটি ডলারের বিদেশি লগ্নি। মার্কিন কংগ্রেসের রিপোর্টে জানা গিয়েছে একথা। রিপোর্টে মন্তব্য করা হয়েছে, এশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে পুঁজি সরে যাওয়ার ফলে মন্দার ছায়া হবে দীর্ঘতর।
কংগ্রেস সদস্যরা জানিয়েছেন, ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন, স্পেন ও ইতালিতে ৩ কোটি মানুষ সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন। ২০২০ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ইউরোজোনের অর্থনীতির বহর কমেছে ৩.৮ শতাংশ। ১৯৯৫ সালের পর থেকে আর কোনও ত্রৈমাসিকে অর্থনীতির এতদূর সংকোচন হয়নি।
এর পরেও রিপোর্টে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, তিনটি দেশ আন্তর্জাতিক মন্দা থেকে রক্ষা পেতে পারে। দেশগুলি হল ভারত, চিন ও ইন্দোনেশিয়া। অবশ্য ওই দেশগুলিতেও বিকাশের হার কমবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অন্যান্য দেশের মতো তাদের অর্থনীতি সংকুচিত হবে না।
মার্কিন অর্থনীতির অবস্থাও শোচনীয়। চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে আমেরিকার জিডিপি পড়েছে ৪.৮ শতাংশ। মহামন্দার সময় ২০০৮ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকের পর গত ১২ বছরে আমেরিকার জিডিপি এতটা নামেনি।
শিল্প বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের আশঙ্কা, এই মাসের মধ্যেই বহু আন্তর্জাতিক ও দেশীয় উড়ান সংস্থা দেউলিয়া হয়ে পড়বে। চিনা পর্যটকের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে বলে দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এশিয়ার দেশগুলির পর্যটন অর্থনীতি।