যতদিন না কোভিড ভ্যাকসিন ও কার্যকরী ড্রাগ বাজারে আসছে, বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা যেতে পারে, এমনই নিদান দিয়েছিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। আর তারপরেই দিল্লী, গুজরাত ও কেরলে প্লাজমা থেরাপির ট্রায়াল শুরু হয়। দিল্লীতে যে চার রোগীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা হয়েছিল, তাতে ‘আশাব্যঞ্জক ফল’ মিলেছে বলে এবার দাবি করলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা জানান তিনি। একই সুর চিকিৎসকদের গলাতেও। কয়েকদিনের মধ্যে আরও পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছেন কেজরিওয়াল। একইসঙ্গে তাঁর আবেদন, ‘যাঁরা করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাঁরা যেন প্লাজমা-রক্ত দান করেন, তবেই এই থেরাপি প্রয়োগ সম্ভব হবে।’
প্রসঙ্গত করোনাকে হারাতে পারে এমন প্রতিষেধক বা ওষুধের হদিশ এখনও মেলেনি। ক্রমাগত পরীক্ষা চলছে। কিন্তু এখনও আশাব্যঞ্জক ফল মেলেনি। তাই বিকল্প পথে ‘প্লাজমা থেরাপি’ প্রয়োগ করে করোনা রোগীদের সুস্থ করার চেষ্টা চলছে। কী এই থেরাপি? করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের শরীরের প্লাজমা বা রক্তরস নিয়ে করোনা আক্রান্তদের শরীরে তা প্রতিস্থাপন করা। তাহলে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির অ্যান্টিবডি আক্রান্তের শরীরে গিয়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসকে হারিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তুলতে পারবে বলেই বিজ্ঞানীদের ধারণা। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই দিল্লীর লোক নায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর ওপর পরীক্ষামূলকভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, চারজনের মধ্যে দুজন দ্রুত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন। এঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা এতটাই আশঙ্কাজনক ছিল যে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। তবে প্লাজমা থেরাপির পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর তিনি অনেকটাই সুস্থ। এদিন এ কথা জানানোর পাশাপাশি কেজরিওয়াল বলেন, ‘এটা প্রাথমিক ফল। করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার উপায় পেয়ে গিয়েছি, এমন ভাবনার কোনও কারণ নেই। তবে হ্যাঁ, আশার আলো দেখা গিয়েছে, তা বলাই যায়।’ পাশাপাশি, করোনা যুদ্ধে জয়ীদের প্লাজমা দানের জন্য এগিয়ে আসার আবেদনও জানিয়েছেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘যাঁরা করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন, তাঁরা যেন প্লাজমা-রক্ত দান করেন, তবেই এই থেরাপি প্রয়োগ সম্ভব হবে।’