প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী গুরুতর অসুস্থ। এতটাই যে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
দেরি করলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, বুধবার দুপুর আড়াইটের বিমানে দিল্লি রওনা হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিমানবন্দরে নেমে সোজা দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে (এইমস) যাবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এইমসে ভর্তি হয়েছিলেন বাজপেয়ী। তখনই নীতি আয়োগের একটি বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন মমতা। দিল্লি নেমেই সে বারও সোজা এইমসেই গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় চল্লিশ মিনিট সেখানে থেকে ডাক্তারদের থেকে সমস্ত বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থার সমস্ত খোঁজখবর নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে বুধবার সকাল থেকে কার্যত ভিড় ঘিরে নিয়েছে এইমসকে। বিজেপি কর্মী, সমর্থক, মিডিয়া, পুলিশ মায় ঠেলাঠেলি এইমস চত্বরে। বাজপেয়ীর আরোগ্য কামনায় তাঁর জন্ম-শহর গোয়ালিয়র থেকে নির্বাচন কেন্দ্র লখনউতে শুরু হয়ে গিয়েছে মন্দিরে মন্দিরে পুজো। মসজিদে দোয়া।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর আরোগ্য কামনা করেছেন মমতাও।
বস্তুত বাজপেয়ীর সঙ্গে মমতার সম্পর্কের মাত্রা একেবারেই অন্যরকম। কংগ্রেস থেকে মমতা তৃণমূল গঠন করার পর গেরুয়া শিবিরের এই নেতাটিই এসে দাঁড়িয়েছিলেন মমতার পাশে। ৯ জন সাংসদের দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রীকে তাঁর মন্ত্রিসভায় রেলমন্ত্রীর পদ দিয়েছিলেন বাজপেয়ী। সেই প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ক্যাবিনেট মন্ত্রী হওয়া মমতার। পরবর্তীকালে বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় কয়লা মন্ত্রীও হয়েছিলেন মমতা।
শুধু তাই নয়, এই রাজনৈতিক সম্পর্কের বাইরে ব্যক্তিগত স্নেহের সম্পর্কও ছিল মজবুত। কলকাতায় এসে একবার সোজা মমতার কালীঘাটের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন বাজপেয়ী। মমতার মা-য়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছিলেন তিনি।
বাজপেয়ীর ব্যাপারে সদা প্রশংসা ঝড়ে পড়ে মমতার মুখ দিয়েও। ইদানীং বার বার যখন মোদী-অমিত শাহদের রাজনীতি নিয়ে সমালোচনা করেন মমতা, বার বার তুলে আনেন বাজপেয়ীর প্রসঙ্গ। বলেন, উনি সুস্থ থাকলে এমনটা হতে দিতেন না। বিজেপি নেতা হয়েও তাঁর ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক অবস্থান এবং দেশনেতা সুলভ আচরণ অতুলনীয়।