রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকেই সচেষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কাজে ইতিমধ্যেই সন্তোষ জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর বাংলার কো-অর্ডিনেটর ডাঃ প্রীতম রায়। করোনা রুখতে বাংলার সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে যে কেন্দ্রও গর্বিত বোধ করছে সে কথাও কবুল করেছেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদান। তবে বিলেত ফেরত কলকাতার এক যুবকের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও তাঁর থেকে তাঁর পরিবারের তিন সদস্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা থেকে আরও কড়া অবস্থান নিয়েছে রাজ্য। আবার রাজ্যে করোনা আক্রান্ত, বিদেশ থেকে আসা কতজনের স্ক্রিনিং হয়েছে, কতজন গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন, কতজন কোয়ারেন্টিনে আছেন, কতজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তার বিস্তারিত খতিয়ান দিল স্বাস্থ্য দফতর।
রাজ্য সরকার জানাচ্ছে, গত ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ কে প্যান্ডেমিক ঘোষণার প্রেক্ষিতে ২৫ মার্চ পর্যন্ত কলকাতা ও বাগডোগরা বিমানবন্দরে মোট ৮১ হাজার ৯৩ জনের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনটি নৌ বন্দরে ৫ হাজার ৩৪১ জন জাহাজ কর্মী, নাবিক, ক্রু-এর স্ক্রিনিং করা হয়। রাজ্যের নেপাল ও বাংলাদেশ সীমান্তের বিভিন্ন চেক পোস্টে সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ ৩৮ হাজার ৮০৮ জনের স্ক্রিনিং টেস্ট হয়। এ-ও জানানো হয়েছে যে, ২৫ মার্চ পর্যন্ত করোনা প্রভাবিত দেশ থেকে আসা ২৭ হাজার ১০৭ জনকে চিহ্নিত করে নজরে রাখা হয়। তাঁদের ১৪ দিন গৃহ পর্যবেক্ষণে থাকার কথা বলা হয়। এর মধ্যে ১,৮০৮ জনের পর্যবেক্ষণ মেয়াদ শেষ হয়েছে। বর্তমানে আরও ৪ হাজার ৬৭ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত মোট ১০ জন করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোট ২১৭ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। ২৫ হাজার ৭২ জন গৃহ পর্যবেক্ষণে আছেন। ২৫ মার্চের আগে পর্যন্ত করোনা সন্দেহে ২৪৪ জনের রক্ত ও লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যার মধ্যে ২৩৩ জনের রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ পাওয়া গিয়েছে। দু’ জনের রিপোর্ট আসার অপেক্ষা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার এ-ও জানিয়েছে যে, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৮৬ টিতে আইসোলেশনের সুবিধা রয়েছে, যাতে করোনা সন্দেহে কোনও রোগীকে আলাদাভাবে রাখা যায় এবং তাঁর চিকিৎসা করা যায়।