করোনা রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করল রাজ্য সরকার। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং জানিয়েছিলেন,করোনা নিয়ে কোনওরকম গুজব কিংবা ভুয়ো খবর সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্য কোথাও প্রচার করা হলে কড়া পদক্ষেপ করবে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার আগেই কার্যত প্রশাসন গুজব আটকাতে ময়দানে নেমে পড়েছে।
ইতিমধ্যেই করোনা নিয়ে ভুয়ো খবর শেয়ারের জন্য বুধবার দুপুরেই এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। রাজ্যের মধ্যে করোনা নিয়ে এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম ঘটল। আলিপুরদুয়ার শহরের সূর্যনগর এলাকার বাসিন্দা ওই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আদালত থেকে জামিন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি।
জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ারে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রতি পোষ্ট করেছেন তিনি। সম্পূর্ণ মিথ্যে এই তথ্য নজরে আসার পরেই ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পুলিশে বুধবার অভিযোগ দায়ের করে স্বাস্থ্য দফতর। তারপরেই তাঁকে নোটিস পাঠায় পুলিশ।
এদিকে করোনা গুজব রোধে পথে নামল কলকাতা পুলিশও। আজ সকালে লালবাজারে ডেকে জেরা করা হল প্রায় ১২ জনকে। ফোন করেও বহু মানুষকে সতর্ক করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দা আধিকারিকরা। বুধবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব ছড়ানো নিয়ে শহরবাসীকে সতর্ক করেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। মঙ্গলবারও তিনি এই বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তারপরও ছড়ানো হয় গুজব।
এদিনও পুলিশ কমিশনার সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, গুজব ছড়ালে আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘অনুরোধ, সত্যতা যাচাই না করে অযথা করোনা সংক্রান্ত মেসেজ ফরোয়ার্ড করবেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা এই ধরনের পোস্টের উপর নজর রাখছি। যাঁরা মিথ্যা খবর বা গুজব ছড়াবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা নিয়ে বহু গুজব ছড়াচ্ছে শহরময়। বিশেষ করে ফেসবুক বা হোয়াটস অ্যাপে ছড়াচ্ছে বেশি গুজব। কখনও বলা হচ্ছে, এই রাজ্যে করোনা ভাইরাস এতটাই ছড়িয়েছে যে, তা সাংঘাতিক অবস্থায় এসে পড়েছে। আবার কোনও বৈদ্যুতিন মিডিয়ার চ্যানেল চালিয়ে টিভি থেকে স্ক্রিন শট নিয়ে তার উপর ‘মরফিং’ করা হচ্ছে। ‘মরফিং’ করে করোনা আক্রান্ত সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। এই ধরনের একের পর এক গুজব ছড়ানো হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাই মঙ্গলবার থেকেই সতর্ক করছিলেন পুলিশ কমিশনার।