দেশের সামাজিক সম্প্রীতি এবং অর্থনীতি, দুই-ই গভীর চিন্তায় রেখেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে। যা নিয়ে ফের একবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন তিনি। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এখনই উচিত দেশকে আশ্বস্ত করা। শুধু কথা দিয়ে নয়। বরং কাজ দিয়ে তাঁর আশ্বস্ত করা উচিত যে তিনি দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত এবং এর থেকে অনায়াসে বের হতে তিনিই সাহায্য করবেন।’ এই প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’-তে একটি কলাম লিখেছেন মনমোহন।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ‘মারাত্মক’ এবং তা ‘বিষণ্ণ’ করে দেওয়ার মতো। এমনটাও লিখেছেন মনমোহন। ‘আমায় খুব ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে এটা লিখতে হচ্ছে। আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে এই ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা কেবল ভারতের আত্মাকেই ধ্বংস করে দেবে এমনটা নয়, একই সঙ্গে অর্থনৈতিক এবং গণতান্ত্রিকভাবে বিশ্বে ভারত যে জায়গায় রয়েছে তারও পদস্খলন হবে,’ লেখেন তিনি।
দিল্লী হিংসা পরপরই এই নিবন্ধের মাধ্যমের মনমোহন যে আর্থিক ও সামাজিক দুই দিক থেকেই বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানায় নিয়েছেন তা স্পষ্ট। গোটা বর্বরতার জন্য তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন ‘সমাজ বিরোধী এবং কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে’। যদিও কারোর নাম তিনি নেননি। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব যাদের, তারাও নিজের ধর্ম পালন করেনি বলেই লিখেছেন তিনি। একই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের যে ধরনের ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল, সেটাও তারা গ্রহণ করেনি বলে দুঃখপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মনমোহন লিখেছেন, ‘কোনও তদন্ত হচ্ছে না। ফলে সামাজিক অস্থিরতার এই আগুন দ্রুতগতিতে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও ছড়াচ্ছে এবং আমাদের দেশের আত্মাকে নষ্ট করে দেওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। এই আগুন একমাত্র তাদের পক্ষেই নেভানো সম্ভব যারা এটা লাগিয়েছে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে ভারত নিজের জায়গা থেকে কয়েক ধাপ নেমে গিয়েছে। উদার গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নতির যে উদাহরণ ভারত স্থাপন করেছিল সেই জায়গাও হারিয়ে যাচ্ছে।’