মোহনবাগানের অস্ত্রেই বাগান বধ করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন চেন্নাইয়ের কোচ আকবর নওয়াজ। প্রেসিং ও পাসিং ফুটবল দেখা গেল কাটসুমিদের পায়ে। আর তাতেই কিছুটা খেই হারালেন মোহনবাগান ফুটবলাররা। বলের আধিপত্য চেন্নাইয়ের বেশি থাকলেও সুযোগ তৈরি করল দু’দলই। গোলও এল। কিন্তু যে পরিকল্পনা চেন্নাই কোচ নিয়েছিলেন তা কাজে এল। বাগানকে কল্যাণীতে আটকে দিল চেন্নাই। ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হল লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দোরগোড়ায় থাকা ক্লাবকে।
কাল ম্যাচ ড্র হলেও নাগাড়ে তেরো ম্যাচ জিতে আই লিগের রেকর্ড করা জোসেবা বেইতিয়াদের বড় কোনও ক্ষতি হল না। এ জন্য ট্রফি জয়ের উৎসব হয়তো পিছিয়ে যেতে পারে কয়েক দিন। লিগ টেবলের পরিস্থিতি যা, তাতে সহজ অঙ্ক হল, বাকি পাঁচ ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট দরকার পালতোলা নৌকার সওয়ারিদের। অন্য আর একটা সম্ভাবনাও উঁকি দিচ্ছে। তা হল, সোমবার ইস্টবেঙ্গল বনাম রিয়াল কাশ্মীর ম্যাচে কাশ্মীর পয়েন্ট নষ্ট করলেই সুবিধা হয়ে যাবে ১৩০ বছরের ক্লাবের। সে ক্ষেত্রে ১০ মার্চ আইজল এফসি-র বিরুদ্ধে এই মাঠে জিতলেই গোষ্ঠ পাল সরণির তাঁবুতে ঢুকে যাবে ট্রফি।
মাঝমাঠে বলের দখল নিতে পারছিল না মোহনবাগান। বারবার দলে পরিবর্তনের ফলে কিছুটা বোঝাপড়ার অভাব হচ্ছিল বাগান ফুটবলারদের মধ্যে। বিশেষ করে ডিফেন্স ও মাঝমাঠে বারবার পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছিলেন কোচ কিবু ভিকুনা। ২৭ মিনিটের মাথায় বা’প্রান্তে বল ধরে একক কৃতিত্বে ৪-৫ জন বাগান ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢোকেন কাটসুমি। তাঁর পাসে মিরান্ডার শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
৩০ মিনিটের পর কিছুটা খেলায় ফেরে মোহনবাগান। ৩১ মিনিটের মাথায় বেইতিয়ার ফ্রিকিক বারে লেগে ফেরে। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে মোরান্তের লং বল চেন্নাইয়ের ডিফেন্ডার রোহিত মির্জার ভুলে পান নংদম্বা নওরেম। বক্সের মধ্যে অরক্ষিত বাবার উদ্দেশে ঠিকানা লেখা ক্রস বাড়ান তিনি। ডান পায়ের শটে সান্তানার ডানদিক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে সবুজ-মেরুনকে এগিয়ে দেন বাবা। প্রথমার্ধে ১-০ লিড নিয়েই ড্রেসিং রুমে যায় মোহনবাগান।
বিরতির কিছু ক্ষণ পর জকসনের পাস থেকে গোল করে গেলেন মোহনবাগানেরই প্রাক্তনী ইউসা কাতসুমি। ১-১ হয়ে যাওয়ার পরে রক্ষণ আরও জমাট করে দিলেন চেন্নাই কোচ। কিবু-বাহিনী তখন ঝাপটা দিতে শুরু করল। কিন্তু পাপাদের সব লড়াই শেষ হয়ে যাচ্ছিল চেন্নাই রক্ষণে এসে। বেইতিয়ার দুর্দান্ত হেড বাঁচালেন তাঁরই স্বদেশীয় গোলকিপার চেন্নাইয়ের গার্সিয়া সান্তানা। সুযোগ নষ্ট করলেন পাপা-ও। কিবু অবশ্য বললেন, ‘‘পাপা মেসি নয়। ও বক্স স্ট্রাইকার। ওর কাজ গোল করা। সেটাই পাপা করছে।’’ মোহনবাগানের একটি ক্ষতি অবশ্য এ দিন হল। কার্ড দেখায় পরের আইজল ম্যাচে খেলতে পারবেন না ফ্রান মোরান্তে।