পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) জালিয়াতিতে অন্যতম অভিযুক্ত মেহুল চোকসিকে ২০১৭ সালে নাগরিকত্ব দেওয়ার আগে ভারতের কাছ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কোনও খারাপ রিপোর্ট দেয়নি ভারতের সংস্থাগুলি।ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক ও মুম্বই পুলিশ ‘সন্তোষজনক’ শংসাপত্র দিয়েছিল তাঁকে। ছাড়পত্র দিয়েছিল সরকারি সংস্থা সেবি। নাম ছিল না ইন্টারপোলের খাতাতেও। এমনই জানাল অ্যান্টিগা সরকার। সেবি অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, চোকসির বিষয়ে অ্যান্টিগার পক্ষ থেকে কোনও তথ্য চাওয়া হয়নি এবং কিছু জানানোও হয়নি।
সিটিজেনশিপ বাই ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট অফ অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডা-র পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতি উল্লেখ করে একটি সংবাদপত্র জানিয়েছে, ‘২০১৭-র মে-তে অ্যান্টিগার নাগরিকত্বের আবেদন জানান মেহুল চিনুবভাই চোকসি। তাঁকে নাগরিকত্ব দেওয়ার আগে ইন্টারপোল সহ বিভিন্ন সূত্র থেকে খোঁজ নেওয়া শুরু করে অ্যান্টিগা সরকার। জানা যায়, ২০১৪ ও ২০১৭ সালে চোকসির সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় সেবি। ভারত সরকারের কাছ থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। বিদেশমন্ত্রক ও মুম্বইয়ের আঞ্চলিক পাসপোর্ট দফতর কোনও খারাপ রিপোর্ট দেয়নি। সেবি জানায়, একটি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। সেক্ষেত্রে আর কোনও সমস্যা নেই। অন্য একটি অভিযোগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
২০১৭-র নভেম্বরে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব পেয়ে যান চোকসি। তিনি এ বছরের ৪ জানুয়ারি ভারত ছেড়ে পালান এবং ১৫ জানুয়ারি অ্যান্টিগার নাগরিক হিসেবে যাবতীয় কর্তব্য পালন করার শপথ নেন। পরের দিন পিএনবি-র ব্র্যাডি হাউস শাখার পক্ষ থেকে জালিয়াতির কথা জানানো হয়। ২০১৬-র ২৯ জুলাই হরি প্রসাদ নামে মুম্বইয়ের এক বাসিন্দা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চোকসি ও তাঁর সংস্থাগুলির আইনবহির্ভূত কার্যকলাপের বিষয়ে অভিযোগ জানান। কিন্তু এরপরেও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই বিরোধী আক্রমণের মুখে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কংগ্রেসের দাবি, এই বিবৃতির অর্থ, মেহুলের ব্যাপারে সবই জানত দিল্লি। টুইটারে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে রাহুল গাঁধী লিখেছেন, ‘‘মিস্টার ৫৬-র স্যুট-বুট পরা বিএফএফ (বেস্ট ফ্রেন্ড ফরএভার) মেহুলভাইকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে ক্লিনচিট দিয়েছিল ভারত সরকার। ‘ভাই’ পিএনবি-র ১৩ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।’’ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একটি অনুষ্ঠানে মেহুলকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেছিলেন মোদী। তা নিয়েই কটাক্ষ রাহুলের। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালাও এ দিন বলেন, ‘‘প্রথমে লুট করতে দেওয়া এবং তার পরে পালানোর পথ করে দেওয়া— সরকারের এটাই অন্যতম নীতি।’’