ফের নয়া বিতর্কে যোগীর রাজ্য। এ বার উর্দু কাওয়ালির সঙ্গে শিল্পীর নৃত্য পরিবেশন মাঝপথে থামিয়ে। তাও নবাবের শহর লখনউতে! সুফি-কত্থক নৃত্যের স্রষ্টা হিসেবে বিখ্যাত ওই শিল্পী। লখনৌয়ের একটি প্রেক্ষাগৃহে নৃত্য পরিবেশন করছিলেন সেই খ্যাতনামা শিল্পী মঞ্জরী চতুর্বেদী। রাজ্য সরকার আয়োজিত অনুষ্ঠানে মুগ্ধ দর্শকদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার স্পিকার হৃদয়নারায়ণ দীক্ষিতও। এমন সময় আচমকা বন্ধ হয়ে গেল উর্দু কাওয়ালি। নাচ থামাতে বাধ্য হলেন মঞ্জরী। নবাবের শহরে হোঁচট খেল কাওয়ালির সঙ্গে তাঁর পারফরম্যান্স। কারণ হিসেবে শিল্পীকে স্পষ্ট জানানো হয়, এখানে কাওয়ালি চলবে না। অনেকেই মনে করছেন, কাওয়ালি অহিন্দু সংস্কৃতি বলেই যোগী সরকারের অনুষ্ঠানে তা ‘ব্রাত্য’।
দর্শকাসনে বসে থাকা ব্যক্তিরা দিব্যি শিল্পীর নাচ উপভোগ করছিলেন। কিন্তু আচমকাই বিঘ্ন ঘটল। মঞ্চে উঠে পড়েন এক ব্যক্তি। তিনি ঘোষণা করতে থাকেন, মঞ্জরী চতুর্বেদীর অনুষ্ঠান শেষ। এবার মঞ্চে উঠবেন অন্য এক শিল্পী। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি সামাল দিতেই হয়তো উদ্যোক্তাদের অনুষ্ঠান মাঝপথে থামিয়ে দিলেন। কিন্তু উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলার পর সেই ভুল ভাঙে তাঁর। শিল্পীর দাবি, উদ্যোক্তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন তাঁকে বলেন ‘এখানে কাওয়ালি চলবে না’। কিন্তু কেন চলবে না কাওয়ালি? অনেকেই বলছেন, কাওয়ালি ইসলামিক সংস্কৃতি। তাই হয়তো কাওয়ালি বন্ধ করার নিদান দিয়েছে যোগী প্রশাসন।
অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা কোনওদিন ভোলা সম্ভব নয় বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় উল্লেখ করেন কত্থক নৃত্যশিল্পী। পরে বিস্তারিতভাবে ঘটনা জানাব বলেও লেখেন তিনি। শিল্পী জানান, কাওয়ালি পরিবেশন করায় এই প্রথম কোথাও বাধা পেলেন তিনি। মঞ্জরীর কথায়, ‘বিশ্বজুড়ে নানা জায়গায় আমি পারফর্ম করেছি। কিন্তু নিজের শহর লখনৌয়ে যে এমন একটা ঘটনা ঘটবে, সেটা ভেবেও শিউরে উঠছি।’ কেন্দ্রে মোদী এবং রাজ্যে যোগী সরকারের জোড়া ফলায় বারবার সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের অভিযোগ উঠেছে উত্তরপ্রদেশে। গোমাংস ইস্যুতে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে অনেকের। এই ঘটনা তালিকায় নবতম সংযোজন বলে অভিযোগ। বিতর্কের কেন্দ্রে মঞ্জরীর মতো বিখ্যাত নৃত্যশিল্পীর নাম থাকায় তা অন্য মাত্রা পেয়েছে।