ফের সুপ্রিম কোর্টে বড় জয় হল পেল তৃণমূল। শেষমেশ পিছু হটতে বাধ্যই হল মোদী সরকার। কেন্দ্রের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্ভাব্য নজরদারির সমস্ত প্রচেষ্টা বন্ধ করা হচ্ছে। আধার কার্ডের নিয়ামক কেন্দ্রীয় সংস্থা ইউআইডিএআই সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, তৃণমূলের করা মামলার জেরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আড়ি পাতার যাবতীয় প্রচেষ্টা বন্ধের পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিও। শুধু তা-ই নয়, তারা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন কোনও প্রচেষ্টা আর করা হবে না।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের এই পরিকল্পনা নাগরিকদের গোপনিয়তার অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে তারা। সে সময় দলীয় সাংসদকে দিয়ে নাগরিকদের ব্যক্তিগত পরিসরে আড়িপাতার অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করিয়েছিল দল। অভিযোগ ছিল, সংবিধানের ১৪ ও ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অবমাননা করে মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করছে কেন্দ্রীয় সরকার। নাগরিকদের ব্যক্তি পরিসরে নজরদারি চালানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রের অধীনস্থ আধার কার্ডের নিয়ামক সংস্থা ইউআইডিএআই ‘সোশ্যাল মিডিয়া সারভিল্যান্স হাব’ তৈরি করতে চাইছে। দরপত্র চেয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছিল তারা।
উল্লেখ্য, সরকারের উদ্দেশ্য ছিল, আধার কার্ড সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় কী ধরনের আলোচনা করছে, সে সব জানা। জানা গিয়েছে, এজন্য ফেসবুক, টুইটার ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারি চালাতে এজেন্সি ভাড়া করতে দরপত্র চাওয়া হয়েছিল। আবেদনের সঙ্গেই তৃণমূলের তরফে পেশ করা হয়েছিল ইউআইডিএআই-এর বিজ্ঞপ্তিটিও। মামলার শুনানির শুরুতেই কেন্দ্রের ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছিল বেঞ্চ। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সওয়াল করেছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। শুনানিতে তিনি দাবি করেন, সরকার যে পরিকল্পনা করছে, তা পুরোপুরি গোপনিয়তার অধিকার খর্ব করে। সিংভির সেই যুক্তি কার্যত মেনে নেয় আদালত।
অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়া হাব তৈরির সমস্ত উদ্যোগ রদ করা হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী জোহেব হোসেন ইউআইডিএআই–এর অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল (অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড লিগ্যাল) এ কে জৈনের একটি ই-মেলের উল্লেখ করে জানিয়েছেন, গত বছর মে মাসে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেসে কাজ করার জন্য ‘সেন্ট্রাল পাবলিক প্রোকিওরমেন্ট’-এর মাধ্যমে একটি এজেন্সিকে ভাড়া করার লক্ষ্যে দরপত্র চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হওয়ার পর বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করা হয়। অদূর ভবিষ্যতে এমন কিছু হবে না।