দিঘা : প্রাক-রথযাত্রা আবহে সাজো সাজো রব সৈকতশহর দিঘায়। নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরকে কেন্দ্র করে ক্রমশ বাড়ছে উন্মাদনা। ইতিমধ্যেই ভিড় জমাতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। তবে তাঁদের চিন্তা বাড়াচ্ছে দিঘার হোটেল(Hotel Fare) ও টোটোর আকাশছোঁয়া ভাড়া। ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা যেতে আগে মাথাপিছু ২০ টাকা করে নিতেন টোটোচালকরা। সেই ভাড়াই পাঁচগুণ বেড়ে এখন মাথাপিছু হয়েছে ১০০ টাকা! অন্যদিকে সমুদ্র থেকে দূরে গড়পড়তা হোটেলের নন-এসি রুমের এক রাতের ভাড়া এখন ২০০০ টাকা। আগে এই রুমই মিলত ৫০০-৬০০ টাকায়। এসি রুম মিলত ১২০০-১৫০০ টাকায়। তার জন্য এখন দিতে হচ্ছে ৪০০০-৪৫০০টাকা! পাশাপাশি, রাস্তার পাশে ঝুপড়ি দোকানেও খাবার দাম বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপ নিল প্রশাসন।
Read More: এখনও কেন নীরব কেন্দ্র! পহেলগাঁও ইস্যুতে অভিষেকের প্রশ্নবাণে বিদ্ধ মোদী সরকার
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁদের ফেসবুক পেজে এই সংক্রান্ত অভিযোগ কোনও পর্যটক জানালেই তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেবেন। তাঁর কথায়, “আমরা হোটেল মালিকদের নিয়ে বসেছিলাম।(Hotel Fare) পর্যটকদের অভিযোগ ধরে ধরে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। এরপরও পর্যটকরা আমাদের অভিযোগ জানালে বা সোশাল মিডিয়ায় সংগঠনের পেজে অভিযোগ জানালেও আমরা হোটেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”

আগামী ২৭ জুন রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগন্নাথ মন্দিরের ৭ নম্বর গেট দিয়ে তিনটি রথ বেরোবে। উপস্থিত থাকার কথা ৫০ জনের বেশি ও বিদেশি ভক্তের। কারা কোন রথ টানবে, তাঁদের নামের তালিকাও তৈরি হয়েছে। পুণ্যার্থী-পর্যটকদের সকলেই যাতে রথের রশি ছুঁতে পারেন, সেই লক্ষ্যে একেবারে পুরনো মন্দির পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে থাকবে রথের রশি। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রতিদিন ১ লক্ষ দর্শনার্থী আসছেন। এখনও পর্যন্ত এসেছেন ৩০ লক্ষ পর্যটক। ওড়িশার বালেশ্বর, ভদ্রক, কেওনঝড়, জাজপুর, ময়ূরভঞ্জের মতো এলাকা থেকে বহু মানুষ এসেছেন। ৮৫০ হোটেলের মধ্যে ১০০টি প্রিমিয়াম হোটেল আছে দিঘায়। যেখানে প্রতিদিন প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ হাজার করে অতিথি থাকছেন। এই ক’দিনেই স্থানীয় ব্যবসা ফুলেফেঁপে উঠেছে বিপুল পরিমাণে। কর্মসংস্থানও বেড়েছে।
Link: https://x.com/ekhonkhobor18/status/1934537032195518887
জগন্নাথের মাসির বাড়ির সামনে রথ রাখার জন্য পাথরের চাতাল তৈরি হয়েছে। সংলগ্ন ঝাউবনে তৈরি হয়েছে ঘাসের আস্তরণ। সেখানে প্রবেশের মুখে থাকবে বড় তোরণ। পুরনো জগন্নাথ মন্দিরের পাশে আর একটি ছোট মন্দির তৈরি হয়েছে, যার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কলকাতা ইসকনের ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা দিঘার জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্টের সদস্য রাধারামণ দাস বলেন, “রথের প্রস্তুতি জোরকদমে চলছে। ওই দিন ৫০ জনেরও বেশি বিদেশি ভক্ত দিঘার মন্দিরে আসবেন। তিনটি রথ ফুল দিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে। ২৬ জুন সকাল ৭টা থেকে জগন্নাথদেব ভক্তদের দর্শন দেবেন। প্রথা মেনে নেত্র উৎসব হবে।”
প্রসঙ্গত, ১১ জুন স্নানযাত্রার পর থেকে মন্দির দর্শন বন্ধ রয়েছে। ২৬ জুন সকালে ফের ভক্তদের দর্শন হবে। আদি জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্টের সভাপতি সুশীল প্রধান বলেন, রথযাত্রার দিন থেকে এখানে মেলা বসবে। সারা সপ্তাহজুড়ে ভোগের ব্যবস্থা থাকবে। উল্টোরথের দিন বহু ভক্তকে অন্নভোগ খাওয়ানো হবে। মন্দিরের আশপাশে ১০০টি দোকান বসার আয়োজন করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, নতুন জগন্নাথ মন্দির থেকে আদি মন্দির পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তায় কিছুদূর অন্তর লাগানো থাকবে এলইডি স্ক্রিন।