পাহাড়প্রমাণ লজ্জার মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত থাকাকালীন দুর্নীতি যে কীভাবে প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গিয়েছিল, তা প্রমাণ হয়ে গেল আরও একবার। দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকার অপরাধে এক অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসারকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। অন্য একটি দুর্নীতি মামলায় ওই আমলা অবশ্য এখন জেলেই রয়েছেন। জমি বণ্টন নিয়ে মারাত্মক অভিযোগ ওঠে তাঁকে নিয়ে। সেই সময় মোদীই ছিলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। তখন কচ্ছের জেলাশাসক ছিলেন প্রদীপ শর্মা নামে ওই আমলা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম মূল্যে একটি বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছেন সরকারি জমি। কোনও এক গোপন কারণে ২৫ শতাংশ কম দামে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে ওই জমি। ফলে অন্তত ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে সরকারকে। কিন্তু সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্যটি প্রকাশ্যে আসে তদন্ত শুরু হওয়ার পরে। জানা যায়, ওই সংস্থায় ৩০ শতাংশ শেয়ার আছে আমলার স্ত্রীর সংস্থার।
উল্লেখ্য, এটিই আমলা প্রদীপ শর্মার একমাত্র এবং প্রথম কুকীর্তি নয়! ২৯ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল প্রশাসনের দুর্নীতি দমন শাখা। সেটা ছিল ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। ব্যাপক হইচই পড়ে গিয়েছিল রাজ্যজুড়ে। সেই মামলায় এখনও জেল খাটছেন তিনি। এই অবস্থাতেই সোমবার তাঁকে ৫ বছরের জেল এবং ৭৫,০০০ টাকা জরিমানার সাজা শোনালেন বিচারক। আরও এক মারাত্মক বিতর্কে জড়িয়েছিলেন প্রাক্তন আমলা প্রদীপ। নেপথ্যে ছিল রাজনৈতিক কারণ। এক মহিলা আর্কিটেক্টের বিরুদ্ধে চরবৃত্তির অভিযোগ এনে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন ওই আমলা। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং এক পদস্থ পুলিশ অফিসারের ফোনের কথোপকথনকে কেন্দ্র করেই বিতর্কের সূত্রপাত ঘটে। কথোপকথন সূত্রে ‘সাহেব’ সম্বোধনের আড়ালে কি আসলে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী? উঠেছিল প্রশ্ন। পরে অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্র দফতরের পক্ষ থেকে। তবে প্রাক্তন আমলার ৫ বছর কারাদণ্ডের সাজা যে মোদীর আমলে গুজরাতে দুর্নীতির যাবতীয় অভিযোগকে আবার উসকে দিল, তা বলাই বাহুল্য।
