ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে গিয়েছে দক্ষিণ কলকাতায়। লর্ভস মোড় সংলগ্ন সান্ধ্যবাজারের সেই ঝুপড়ি থেকেই বুধবার দুপুর তিনটে নাগাদ আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে সেই আগুন বিধ্বংসী রূপ নেয়। পরপর ১০-১৫টি দোকানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় প্রায় ১২টি দোকান। ভস্মীভূত হয় একাধিক ঝুপড়ি। খবর পেয়েই দার্জিলিং থেকে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করে খোঁজ নেন উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের নির্দেশও দিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ৯৩ নং ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান মেয়র। আগুনের গ্রাসে সর্বহারা মানুষদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত তাঁদের বিকল্প থাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্তদের ডকুমেন্টেশনও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানাগরিক। এদিন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিকেলের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন।
প্রসঙ্গত, প্রিস আনোয়ার শাহ রোডের পাশে রয়েছে খাবারের দোকানের সারি। তার পিছনদিকে রয়েছে বেশ কয়েকটি ঝুপড়ি। সেই ঝুপড়ি থেকেই আগুন লাগে। খবর পেয়ে প্রাথমিকভাবে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ধাপে ধাপে দমকলের মোট ১৫টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। আগুনকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় যানজট। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় যাদবপুর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এলাকাটি ঘিঞ্জি হওয়ায় আগুন আনতে বেগ পেতে হয়। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় বিকেল ৫টা নাগাদ আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে। আরও কিছুক্ষণের চেষ্টায় পকেট ফায়ারগুলিও নিয়ন্ত্রণে আসে। কীভাবে আগুন লাগল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দমকলের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে আগুনের উৎস।
বুধবার অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিধায়ক দেবাশিস কুমার, স্থানীয় কাউন্সিলর মৌসুমী দাস ও তপন দাশগুপ্ত। আসেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসএসডি) বিদিশা কলিতা। দেবাশিস কুমার বলেন, একটি খাবারের দোকান থেকে আগুন লেগেছে। কিন্ত কীভাবে সেই আগুন লাগল, সেটা খতিয়ে দেখছে দমকল। তবে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে, সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই ঘটনাস্থলে যান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ভস্মীভূত ধ্বংসস্তূপ ঘুরে দেখে কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। “১৬টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। স্থানীয় কাউন্সিলর মৌসুমি তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজে দার্জিলিং থেকে ফোন করে অবিলম্বে গৃহহীনদের পুনর্বাসনের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি কথা বলেছি। লোক এসে ডকুমেন্টেশনের কাজ করে দেবে। তারপর জায়গা ঠিক করে ক্ষতিগ্রস্তদের ১৬টি পরিবারকে বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে”, জানিয়েছেন মেয়র।