Anti Rape Aparajita Bill আর জি কর কাণ্ডের পর ধর্ষণ রুখতে শীঘ্রই কঠোর আইন আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতোই আজ, মঙ্গলবার বিধানসভায় পেশ হল ধর্ষণবিরোধী ‘অপরাজিতা বিল’। গত ২৮ আগস্টের ছাত্র সমাবেশ থেকেই আইন আনার কথা বলেছিলেন মমতা। বিলটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু’ (পশ্চিমবঙ্গ ফৌজদারি আইন সংশোধনী) বিল। প্রস্তাবিত বিলটিতে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও পকসো আইনেরও কয়েকটি ধারা সংশোধন করে কঠোরতর বিধি যুক্ত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সবাই আমার বিরোধিতা করলেও, আমি তাঁদের বিরোধী নই। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলব, মেয়েদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে, যখন দিনটি ঠিক করেছিলাম, তখনও জানতাম না।
কিন্তু ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। মেয়েদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে ৩ সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮১ সালে আজকের দিনেই রাষ্ট্রপুঞ্জ মেয়েদের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে সব বৈষম্য দূর করতে, কনভেনশন অফ দ্য এলিমিনেশন অফ অল ফর্ম অফ ডিসক্রিমিনেশন সম্মেলন হয়। আজ সেই দিন। যে মেয়েটি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁর জন্য শোকজ্ঞাপন করছি। গোটা দেশে যাঁরা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, অত্যাচারিত হয়েছেন, তাঁদের অত্যাচারের করুণ কাহিনী কিন্তু আপনাদের (বিরোধী) মুখে শুনলাম না। ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট, নৃশংস এবং নক্ক্যারজনক ঘটনার ক্ষেত্রে অত্যবন্ত দ্রুত পুলিশি অনুসন্ধান এবং বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে দোষীদেরকঠোর আশস্তি দেওয়ার কথা বলছি আমরা। যে কোনও শুভ বুদ্ধসম্পন্ন মানুষই নিঃশর্ত ভাবে এই বিলকে সমর্থন করবেন আশা রাখি। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ধর্ষণ। যে সমাজে মেয়েরা ভাল থাকে না। সেই সমাজ ভাল থাকতে পারে না। আমি মনে করি, পরিবারের কাউকে হারিয়েছি। মেয়েটি মারা গিয়েছে ৯ আগস্ট। মৃতদেহ দাহ হয় রাত ২টো-আড়াইটে নাগাদ, অর্থাৎ ১০ তারিখ। ১২ তারিখে আমি নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলাম। যেদিন মারা যান, তাঁর বাবা-মার সঙ্গে কথা বলি। সিপি-ই ফোনে ধরিয়ে দিয়েছিলেন। বাড়িতে যখন গিয়েছিলাম, তার আগে তদন্তকারীকে দিয়ে অডিও-ভিডিও, সিসিটিভি ফুটেজ পাঠানো হয়েছিল বাবা-মায়ের কাছে, যাতে বাইরে প্রচার না করে সবটা জানতে পারেন তাঁরা। আমি যখন পরিবারের সঙ্গে কথা বলি, পরিষ্কার বলে এসেছিলাম, আজ সোমবার, আমাকে রবিবার পর্যন্ত সময় দিন। তদন্ত করে যাঁরা যুক্ত, তাঁদের গ্রেফতার করতে না পারলে, সিবিআই-এরপ হাতে মামলা তুলে দেব। তাঁরা বলেছিলেন ঠিক আছে।”
লিঙ্কঃ https://x.com/ekhonkhobor18/status/1830902368126263491
পাশাপাশি, মমতার সংযোজন, “১২ ঘণ্টার সময় নিয়েছিল পুলিশ মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে। টিম গঠন করা হয়েছিল, সব খতিয়ে দেখার জব্য ফাস্টট্র্যাক কোর্টে ফাঁসির আবেদন জানাতে পুলিশকে বলেছিলাম। কিন্তু মঙ্গলবারই আদালতের অর্ডারে সিবিআই হয়ে যায়। আমরা বলছি, সিবিআই-এর থেকে বিচার চাই। আমরা প্রথম থেকেই ফাঁসি চেয়ে আসছি।” ধর্ষণবিরোধী বিলে আজ সমর্থন জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির বিধায়করা। তবে শুভেন্দু জানান, এই বিলকে সমর্থন করছেন তাঁরা। কিন্তু দ্রুত তা আইনে কার্যকর করতে হবে। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “বিরোধী দলনেতা কতগুলি কথা বলেছেন। আইনে পরিণত করার কথা বললেন। রাজ্যপালকে বলুন বিলে সই করে দিতে। তার পরও যদি কার্যকর না হয়, দায়িত্ব আমাদের। আমরাও রেজাল্ট চাই। আপনারা বলছে, সরকার ফাস্টট্র্যাক কোর্ট করেনি। আপনার কথা উত্তরে এটুকু বলার অধিকার আছে, দেশের মধ্যে ছোটরাজ্য মিলিয়ে আমরা তৃতীয়, যা লোকসভার রেকর্ডে রয়েছে। ১৯১৩ সালে যে ৮৮টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট ছিল, তার খরচ বহন করত কেন্দ্র। ২০১৩ সাল থেকে সেই টাকা বন্ধ। তার পরও আমাদের রাজ্যএ বর্তমানে ৮৮টি ফাস্টট্র্যাক কোর্ট রয়েছে। মহিলাদের জন্য ৫২টি ডেজিগনেটেড কোর্ট রয়েছে, যাতে দ্রুত বিচার হয়। ৩ লক্ষ ৯২ হাজার ৬২০টি মামলা দায়ের হয়েছে সেখানে, যার মধ্যে ৩ লক্ষ ১১ হাজার ৪৭৯টি মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। ৭ হাজার মামলা কোর্টে পেন্ডিং রয়েছে। এর আগে কামদুনি মামলায় সরকারি কৌঁসুলি পাল্টানোর অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৩ সালের ৭ জুন। চার্জশিট তিন সপ্তাহের মধ্যে দায়ের করে সিআইডি, ২৮ জুন। সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া হয় ১০ জুলাই। কিন্তু আদালত রায় দেয় ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি। আদালত আমাদের হাতে নেই, আপনাদের হাতে রয়েছে। তাই আপনাদের অনুরোধ করছি। আমরা ফাঁসি চেয়েছিলাম, কিন্তু কোর্ট শাস্তি দিয়েছিল। একজন মারা যায় বিচার চলাকালীন। তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড তিন জনকে যাবজ্জীবন এবং দু’জনকে খালাস করা হয়। যাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়, তাঁর বিরুদ্ধে আমরা আবেদন জানাই। এর পর হাইকোর…