ফের প্রকাশ্যে এল দেশের কর্মসংস্থানের হতশ্রী চিত্র। নরেন্দ্র মোদীর জমানায় সারা ভারতেই তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে বেকারত্বের সমস্যা। এবার এই ছবি ফুটে উঠল আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের রিপোর্টে। আর এই তথ্যকে অস্ত্র করেই মোদী সরকারকে কড়া ভাষায় একহাত নিয়েছে কংগ্রেস। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জানান, কেন্দ্রের অদূরদর্শী নোটবাতিলের সিদ্ধান্ত, আচমকা জিএসটি চালু করা ও চীন থেকে আমদানি বৃদ্ধির পদক্ষেপ ক্রমশ ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে ভারতের কর্মসংস্থানের অন্যতম স্তম্ভ ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে। দিনকয়েক আগেই সেন্টার ফর মনিটারিং ইন্ডিয়ান ইকনমির সমীক্ষা রিপোর্টে জানা গিয়েছিল, গত আট মাসে দেশে বেকারত্বের হার সর্বাধিকে পৌঁছে গিয়েছে। গত জুনে দেশে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পেয়ে ৯.২ শতাংশ হয়েছে। যা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক।
পাশাপাশি, জয়রাম রমেশের মতে, দেশের বেকারত্ব সংকট নিয়ে কংগ্রেস গত পাঁচ বছর ধরেই সরব। মোদী সরকারের আর্থিক নীতির জন্যে কেবল বড় সংস্থাগুলিই লাভবান হচ্ছে। দেশে বেকারত্বের হার গত ৪৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে দিয়েছেন মোদী। স্নাতক পাস তরুণ প্রজন্মের বেকারত্বের হার ৪২ শতাংশ। ভারতের মোট শ্রমশক্তির মাত্র ২১ শতাংশ কর্মী নিয়মিত বেতন পান। করোনা অতিমারী-পর্বের আগে এর হার ছিল ২৪ শতাংশ। সিটি গ্রুপ রিপোর্টে জানিয়েছে, ভারতে তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের জন্য আগামী এক দশকে প্রতি বছরে ১.২ কোটি রোজগার তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। দেশের জিডিপি বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের দাবিকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস বলেছে, রিপোর্ট অনুসারে সাত শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির হার কর্মসংস্থান তৈরির পক্ষে যথেষ্ট নয়। মোদী সরকারের আমলে দেশে জিডিপি বৃদ্ধির হার গড়ে ৫.৮ শতাংশ। অভিযোগ, আর্থিক ক্ষেত্রে মোদী সরকার ব্যর্থ, এটাই বেকারত্ব বৃদ্ধির প্রধান কারণ। কেন্দ্রীয় সরকার ১০ লক্ষ শূন্যপদ পূরণ করছে না। এতে শিক্ষিত তরুণ প্রজন্ম প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। পাশাপাশি, সমস্যা হচ্ছে সরকার পরিচালনার কাজেও। সিটি গ্রুপের রিপোর্টে মোদীর চালু করা একাধিক প্রকল্প নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রকল্পগুলি মানুষের কোনও উপকারেই লাগে না বলেও রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। যার অন্যতম উদাহরণ স্কিল ইন্ডিয়া প্রকল্প। মুদ্রা ও স্বনিধি প্রকল্পেও ছোট ব্যবসায়ীরা কোনও সাহায্য পায়নি। গ্রামীণ এলাকায় মজুরি প্রত্যেক বছর এক থেকে দেড় শতাংশ কমছে। ফলত গ্রামের মানুষরা দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হয়ে পড়ছেন।