রূদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ হাসি হাসল ভারতই। রবিবার নিউ ইয়র্কে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলেন রোহিতরা। প্রথম ব্যাট করে ১১৯ রান তুলেছিল ভারত। সহজ রানের লক্ষ্য পেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ম্যাচ জিততে পারল না তারা। ভারতীয় বোলারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ১১৩ রানে থামতে হল তাদের। রবিবার খেলা শুরু হয় দেরিতে। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর শুরু হয় ম্যাচ। প্রথম ওভার হওয়ার পরেই আবার বৃষ্টি নামে। কিছু ক্ষণ বন্ধ ছিল খেলা। কিন্তু ম্যাচ শুরু হতেই আউট হয়ে যান বিরাট কোহলি (৩ বলে ৪ রান)। বল পিচে পড়ার পর একটু থমকে আসছিল। নাসিম শাহের বল বুঝতে না পেরে আউট হয়ে যান বিরাট। পরের ওভারেই আউট হয়ে যান রোহিত (১২ বলে ১৩ রান)। তাঁর উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। অক্ষর প্যাটেল নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১৮ বলে ২০ রান করেন। পাওয়ার প্লে-তে দলের ইনিংস ধরার চেষ্টা করছিলেন অক্ষর। উল্টো দিক থেকে মারছিলেন ঋষভ পন্থ। পন্থ এবং অক্ষরের ব্যাটে ভর করে ৩৯ রান ওঠে জুটিতে। ৫৮ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ভারত। নাসিম শাহের বলে বোল্ড হন অক্ষর (১৮ বলে ২০ রান)। সুইং করাচ্ছিলেন নাসিম। কিন্তু অক্ষর আউট হয়ে যান সোজা বলে। বলের লাইন বুঝতে পারেননি। সুইং হবে ভেবে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান অক্ষর। অন্যদিকে সাবলীল ব্যাটিংয়ে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন পন্থ। ৩ উইকেট হারিয়ে ৮৯ রান তুলে নিয়েছিল ভারত। কিন্তু সেখান থেকে ১১৯ রানে শেষ হয়ে যায় তাদের ইনিংস। সূর্যকুমার যাদব ৮ বলে ৭ রান করেন আউট হন হ্যারিস রউফের স্লোয়ারে। পরের ৬ উইকেট মাত্র ৩০ রানে হারায় ভারত। শিবম দুবে (৩), হার্দিক পাণ্ডিয়া (৭) এবং রবীন্দ্র জাদেজা (০) রান পেলেন না একেবারেই। পন্থ ৩১ বলে ৪২ রান করেন। তাঁর সেই ইনিংস না থাকলে আরও কম রানে শেষ হয়ে যেত ভারতের ইনিংস।
এদিন ভারতকে অল্প রানে আটকে রাখার কৃতিত্ব পাকিস্তানের পেসারদের। তাঁরাই ভারতের ৯ উইকেট তোলেন। একটি রান আউট হয়। নাসিম শাহ এবং হ্যারিস রউফ তিনটি করে উইকেট নেন। দু’টি উইকেট মহম্মদ আমিরের। একটি উইকেট শাহিন শাহ আফ্রিদির। রান তাড়া করে নেমে শুরুটা খারাপ হয়নি পাকিস্তানের। যশপ্রীত বুমরার প্রথম ওভারে রিজওয়ানের ক্যাচ ফেললেন দুবে। তবে তারপরও ঘাবড়ে যায়নি ভারত। বুমরা, মহম্মদ সিরাজেরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করছিলেন। পাকিস্তানের প্রথম উইকেটটি তুলেছিলেন বুমরা। বাবরকে আউট করেন তিনি। এরপর ১৫ নম্বর ওভারে এসে রিজওয়ানকে বোল্ডও করেন। চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। কোনও ব্যাটারই ইনিংস শুরু করেও দলকে ভরসা দিতে পারলেন না। এক সময় প্রতি বলে এক রান করলেও জিততে পারত পাকিস্তান। কিন্তু সেটাও করতে পারল না তারা। পরিকল্পনার অভাবেই ডুবতে হল পাকিস্তানকে। বুমরা নিলেন তিন উইকেট। হার্দিক পাণ্ডিয়া নিলেন ২ উইকেট। একটি করে উইকেট নিলেন আরশদীপ সিংহ এবং অক্ষর প্যাটেল। উইকেট নেওয়ার সঙ্গে রানও আটকে রাখলেন ভারতীয় বোলারেরা। শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৮ রান। বাঁহাতি পেসার আরশদীপ ১১ রানের বেশি দেননি। জিতে মাঠ ছাড়ে ভারত। টানা দুটি ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেলেন বুমরা। আগামী বুধবার আমেরিকার মুখোমুখি হবে ভারত। সেই ম্যাচ জিতলেই সুপার এইটের টিকিট পাকা হয়ে যাবে টিম ইন্ডিয়ার। অন্যদিকে, টানা দুটি ম্যাচ হারার ফলে পরের রাউন্ডে পৌঁছনো কঠিন হয়ে দাঁড়াল পাকিস্তানের সামনে।