লোকসভা ভোটের আবহে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই তিনিই কিনা জঙ্গিদের টার্গেটে! যদিও ইতিমধ্যেই লালবাজারের কব্জায় ব্যবসায়ী পরিচয়ে কলকাতায় এসে অভিষেকের ওপর ‘গোয়েন্দাগিরি’ চালানো রাজারাম রেগে।
পুলিশ সূত্রে খবর, রাজারামের সঙ্গে যোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক স্তরের এক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের। ফলে রাজারাম কলকাতায় এসে কেবলমাত্র অভিষেকের বাড়ি এবং অফিসে ‘রেইকি’ চালিয়েই ফিরে গিয়েছিলেন, তা মানতে চাইছে না লালবাজার। পুলিশের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ, ৪৮ ঘণ্টার কলকাতা সফরে রাজারাম ঠিক কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, কারও সঙ্গে দেখা করেছিলেন কি না, তা খুঁজে বার করা।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর অভিজাত পল্লি হোয়াইটফিল্ডের ‘রামেশ্বরম ক্যাফে’তে বিস্ফোরণের মূলচক্রীকে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি হোটেল থেকে গ্রেফতার করে এনআইএ। জানা যায়, ধৃতেরা নিজেদের পর্যটক (ট্যুরিস্ট) বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজারামের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। লালবাজার সূত্রে খবর, গত ১৮ এপ্রিল রাজারাম নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। উঠেছিলেন এসএন ব্যানার্জি রোডের এক হোটেলে।
সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের অফিসের পাশাপাশি হরিশ মুখার্জি রোডে অভিষেকের বাড়িতেও ‘রেইকি’ করেছিলেন রাজারাম। এতটা পর্যন্ত জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এখন তাঁরা জানতে চান, ২৬/১১ হামলার অন্যতম কুশীলব লস্কর জঙ্গি ডেভিড কোলম্যান হেডলির সঙ্গে সাক্ষাৎকারী রাজারাম কলকাতায় এসে ঠিক কী কী করেছিলেন।
তদন্তে নেমে প্রয়োজনীয় সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষার পাশাপাশি বিশদে জেরা চলছে রাজারামকে। কলকাতা পুলিশ জানতে চায়, অভিষেকের অফিস এবং বাড়ির পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছেও কি পৌঁছে গিয়েছিলেন ধৃত? ইন্ডিয়ান মিউজ়িয়াম, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মতো শহরের বিভিন্ন ‘ল্যান্ডমার্ক’ বা অভিজ্ঞানেও কি পা পড়েছিল রাজারামের?
অভিষেকের আপ্তসহায়কের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁকে ফোন করেছিলেন রাজারাম। কী করে তিনি নম্বর জোগাড় করলেন? কলকাতায় রাজারামের পূর্ব পরিচিত কারা, এ বিষয়ে বিশদে জানতে চায় পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, রাজারাম কলকাতায় এসে যোগাযোগ করেছিলেন এমন পাঁচ জনের কথা জানতে পেরেছে পুলিশ। রাজারামকে জেরা করে ওই ব্যক্তিদের সম্পর্কে আরও বিশদে জানতে চাইবে পুলিশ।