গত ২ এপ্রিল আদালতে হাজিরা দিতেই পতঞ্জলি সংস্থার ‘অসত্য বিজ্ঞাপন’ মামলায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করা নিয়ে সুপ্রিম-ভর্ৎসোনার মুখে পড়েছিলেন যোগগুরু রামদেব। তাঁকে ‘ফল ভোগ করার জন্য তৈরি থাকার’ কথাও জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। এবার ফের সুপ্রিম কোর্টের রোষের মুখে পড়লেন তিনি। রামদেব এবং পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) তথা রামদেবের সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণের ক্ষমাপ্রার্থনা মঞ্জুর না করে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘আমরা অন্ধ নই’। পুরো বিষয়টি নিয়ে আদালত ‘উদার হতে চায় না’ বলেও মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের উত্তরে সন্তুষ্ট নয় শীর্ষ আদালত।
বুধবার মামলার শুনানি চলাকালীন, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমান্নুলার ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘ক্ষমাপত্র কাগজে-কলমে রয়েছে। ওঁদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে। আমরা এই ক্ষমাপত্র মেনে নিচ্ছি না। আমরা মনে করি ইচ্ছাকৃত ভাবে অঙ্গীকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।’ সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, আদালতে পাঠানোর আগে ক্ষমাপত্র সংবাদমাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন রামদেব। সেই বিষয়েও যোগগুরু এবং তাঁর সহযোগীর সমালোচনা করেছে শীর্ষ আদালত। সেই প্রসঙ্গে বিচারপতি কোহলি বলেন, ‘বিষয়টি আদালতে পৌঁছানোর আগে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এটি আমাদের জন্য আপলোড করা হয়নি। স্পষ্টতই ওঁরা প্রচারে বিশ্বাসী। তাই এমনটা করা হয়েছে।’
মামলার হলফনামা পড়ার সময় বিচারপতি আমান্নুলা রামদেবের আইনজীবী মুকুল রোহতগীকে বলেন, ‘আপনারা হলফনামাতেও ফাঁকি দিচ্ছেন। এটা কে তৈরি করেছে, আমি অবাক।’ এর পর মুকুল জানান, তাঁর মক্কেল আইনের বিষয়ে পেশাদার নন। তাই ভুল হয়েছে। এর পর রামদেবের ক্ষমাপ্রার্থনা আদৌ আন্তরিক কি না সেই প্রশ্ন তুলে বিচারপতি আমান্নুলা বলেন, ‘আমাদের নির্দেশের পরেও ভুল হয় কি করে? আমরা এই ক্ষেত্রে এতটা উদার হতে চাই না।’ একই সঙ্গে এত দিন পতঞ্জলির বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করার জন্য শীর্ষ আদালতের ভৎর্সনার মুখে পড়েছে উত্তরাখণ্ড লাইসেন্সিং বিভাগও। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, কেন উত্তরাখণ্ডের লাইসেন্সিং ইন্সপেক্টররা নিজেদের কাজ করেননি। লাইসেন্সিং বিভাগের তিন জন আধিকারিককে একসঙ্গে বরখাস্ত করা উচিত বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণ।