গত শনিবার লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর তারপর থেকেই দেশজুড়ে লাগু হয়ে গিয়েছে নির্বাচনের আদর্শ আচরণ বিধি। কিন্তু ভোট ঘোষণার পর ৪৮ ঘন্টা পরও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা থেকে লোকসভা নির্বাচনে ডিউটির কাজে যুক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী-সহ বিভিন্ন মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে জ্বলজ্বল করছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ছবি। কেন্দ্রীয় সরকারের ওইসব ওয়েবসাইট খুললে দেখা যাচ্ছে হাসিমুখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ছবিও।
শুধু রাজনৈতিক দলের পতাকা, ফেস্টুন, ফ্লেক্স, হোর্ডিং সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সরানোই নয়। সরকারের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকেও সরিয়ে দিতে হবে বিদায়ী মন্ত্রীদের ছবি। এ সবই নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি আওতায় পড়ে। শনিবার বিকালে ভোট ঘোষণার পর দেশজুড়ে চালু হয়ে গিয়েছে এই আদৰ্শ আচরণবিধি। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্নো ওয়েবসাইটে প্রধানমন্ত্রী থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের বিদায়ী মন্ত্রীদের ছবি সেখানে থেকে যাওয়ায় সমগ্র দেশ জুড়ে ভোটাররা প্রভাবিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। তৈরি হয়েছে বিতর্কও। কারণ এসব ওয়েবসাইট যে কোনও সাধারণ মানুষই নিজেদের ডেক্সটপ, ল্যাপটপ বা মোবাইল থেকে কোনও কাজে বা সাধারণভাবে খুলতেই পারেন। আর সেখানে ভোট ঘোষণার পরেও বিদায়ী মন্ত্রীদের ছবি ভেসে আসা রীতিমত নির্বাচনী বিধিভঙ্গ!
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর ওয়েবসাইট খুললে দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি। সেই ছবির তলায় উদ্ধৃতি দিয়ে তিন লাইন কথা। কথা শেষে নিচে লেখা ‘শ্রী নরেন্দ্র মোদী, অনারেবল প্রাইম মিনিস্টার অফ ইন্ডিয়া।’ একইভাবে তদন্তকারী সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির ওয়েবসাইী টাইপ করলে সেখানেও ভেসে আসছে বুকের কাছে হাতের উপর হাত রাখা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও একই কায়দায় হাসি মুখে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই ওয়েবসাইটের নিচে লেখা আছে ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ সবকা বিশ্বাস সবকা প্রয়াস।’
শুধু তাই নয়। যাঁরা নির্বাচনের কাজে ভোট ডিউটিতে সরাসরি যুক্ত সেই কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফ, আইটিবিপি, সিআইএসএফের ওয়েবসাইটেও সেই একই ছবি। সিআরপিএফের ওয়েবসাইটে ডানদিকে একপাশে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের ছবি। তার পাশে হিন্দিতে লেখা ‘শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারত কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’। একইভাবে ‘শ্রী অমিত শাহ ভারত কে গৃহমন্ত্রী’। ইন্দো-তিব্বতিয়ান বর্ডার পুলিশের ওয়েবসাইটেও সেই মোদ-অমিত শাহ। এমনকী প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইটেও পাশাপাশি রাজনাথ সিং ও অজয় ভট্টর ছবি। নির্বাচন ঘোষণার পর একদিন পার হয়ে গেলেও সেই সমস্ত ছবি সরানো হয়নি।