কথায় আছে, যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। আর এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি চুটিয়ে শিল্প-সাহিত্য চর্চাও করে থাকেন তিনি। এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় যেমন রেকর্ড ভাঙার দিকে দৌড়চ্ছে তাঁর লেখা ১৪৩টি বইয়ের বিক্রি। ৪৭-তম বইমেলায় রবিবার প্রথম তাঁর এবারের লেখা ৭টি বই একত্রে পাওয়া গিয়েছে। কার্যত ‘হট কেকে’র মতো সেসব স্রেফ উড়ে গিয়েছে। গতবার বেস্ট সেলার হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই। এবারও ট্রেন্ড সেই দিকেই বলে মনে করছে প্রকাশনা সংস্থাগুলি।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জানুয়ারি বইমেলার উদ্বোধনের দিন দুটি বই প্রকাশ করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর। তার পর একে একে বাকি বইগুলি ময়দানে নামে। যাদের মধ্যে ‘লহ প্রণাম ছড়ায় ছড়ায়’ (দ্বিতীয় ভাগ), ‘উৎসব সবার’, ‘তৃণমূল স্তরে তৃণমূলের জয়’, ‘কবিতাবিতান’-এর পরিবর্ধিত সংস্করণ, ও লহ প্রণাম ছড়ায় ছড়ায়-এর ইংরেজি সংস্করণ ‘হাম্বল রিগার্ডস’– এই ৫টি বই দেজ পাবলিশিংয়ের। আরও দুটির মধ্যে একটি উৎসব সবার-এর ইংরেজি সংস্করণ ‘ফেস্টিভালস ফর অল’ এবং ‘বিল্ট হেরিটেজ অফ বেঙ্গল’ এই দুটি বই বি বুকস প্রকাশনার।
‘উৎসব সবার’ ও ‘ফেস্টিভালস ফর অল’-এর বিষয় একই। দুর্গাপুজোর পাশাপাশি বাংলার সমস্ত জেলার নানা প্রান্তে কোন কোন উৎসব কীভাবে পালিত হয়, তার বিস্তারিত বিবরণ মূলত ছবি ও উৎসবের বর্ণনায়। লেখার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজস্ব অভিমত মিশেছে। ‘বিল্ট হেরিটেজ অফ বেঙ্গলে’ আবার বাংলার সমস্ত ঐতিহ্যপূর্ণ বাড়ি, ধর্মীয় স্থান জায়গা করে নিয়েছে।
‘লহ প্রণাম ছড়ায় ছড়ায়’ শিশুদের জন্য ভেবে লেখা। এর আগে একটি সংস্করণ নিমেষে শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার তারই দ্বিতীয় ভাগ। এখানে মূলত বাংলা ও দেশের সমস্ত মনীষীকে সম্মান জানিয়ে তাঁদের উপর কবিতাগুলি লেখা হয়েছে। যার ভূমিকা অংশে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘কবিতার মাধ্যমে গুণিজনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি সিরিজ লেখার প্রয়াস শুরু করেছিলাম কয়েক বছর আগে। সেই সিরিজের পঞ্চম বই এটি। বরেণ্য মনীষীদের সম্পর্কে যাতে নব প্রজন্মের মনে আগ্রহ জাগে সেই লক্ষ্যে ২০২০ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয়ছিল আমার প্রথম বইটি।’
এবারের ‘কবিতাবিতান’-এ আরও বেশ কিছু কবিতা যুক্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এবারের লেখা আরও কবিতা নিয়ে বইটি তৈরি। আরেকটি বই সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। নাম ‘তৃণমূল স্তরে তৃণমূলের জয়’। এই বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিশানা বিজেপি। তাদের বিরুদ্ধে হিংসা ও মানুষের উন্নয়ন আটকানোর অভিযোগ বারবার উঠে এসেছে মমতার কথায়। সব কটি বই পাওয়া যাচ্ছে দলীয় মুখপত্র ‘জাগোবাংলা’ স্টলে। দুটি প্রকাশনার সংস্থার স্টলেও বইগুলি মিলছে।