আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই কলকাতায় শুরু হল বাংলা ভাষার বৃহত্তম কবিতা পার্বণ ‘কবিতা উৎসব’। এদিন রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণের একতারা মুক্তমঞ্চে উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন তিনি। স্পষ্ট জানান, “আমার ভাষার উপর বারবার আঘাত হানা হচ্ছে। কবচ দিয়ে নিরাপত্তা দেওয়া নয়, ভাষাকে উদযাপন করতে হবে। আলিঙ্গন করতে হবে। আমাদের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে যদি কোনও প্রতিবাদ থাকে তার নাম কবিতা উৎসব, তার নাম লিটল ম্যাগাজিন উৎসব।” প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তাঁর কথায়, যত দিন যাচ্ছে, কবিতা আকাদেমির আকার-আয়তন বাড়ছে। এটা অত্যন্ত আশার কথা। আমার বিশ্বাস, এবারের কবিতা উৎসব আগের কবিতা উৎসবগুলোকে ছাপিয়ে যাবে। এই আকাদেমি সারা বছর ধরেই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি কবিতার প্রতি ভালবাসার কথা জানান। ছিলেন সংস্কৃতি অধিকর্তা কৌশিক বসাক, প্রণতি ঠাকুর, ব্রততী বন্দ্যোপাধ্যায়, সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভাপতিত্ব করেন পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সভাপতি কবি সুবোধ সরকার। তিনি জানান, এবারের উৎসবের থিম ‘শান্তি’। শান্তির জন্য এই কবিতা উৎসবের আয়োজন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রদান করা হয় কয়েকটি সম্মাননা। পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমি প্রবর্তিত বাংলা ভাষার সর্বোচ্চ কবিতা পুরস্কার ‘জীবনানন্দ দাশ সম্মাননা’ পেলেন কবি, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, সম্পাদক, গবেষক দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সম্মাননা শুরু হয়েছিল কবি মণীন্দ্র গুপ্তকে দিয়ে। সুভাষ মুখোপাধ্যায় সম্মাননা পেলেন গৌতম চৌধুরী। যশোধরা রায়চৌধুরী পেলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্মাননা এবং সব্যসাচী সরকার পেলেন বিনয় মজুমদার সম্মাননা। কবিদের পাশাপাশি সম্মাননা প্রদান করা হয় বাচিক শিল্পীদেরও। কাজী সব্যসাচী সম্মাননা পেলেন বিজয়লক্ষ্মী বর্মন। নীলাদ্রিশেখর বসু সম্মাননা পেলেন সৌমেন চট্টোপাধ্যায়। আবুল কাশেম রহিমদ্দিন সম্মাননা পেলেন মৌলী দাশগুপ্ত। ৬ই জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে উৎসব। কলকাতার রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, বাংলা আকাদেমি সভাঘর, রাজ্য চারুকলা পর্ষদ সংলগ্ন মুক্তমঞ্চ, নন্দন, অবনীন্দ্র সভাঘর, জীবনানন্দ সভাঘর এবং একতারা মুক্তমঞ্চে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি ও আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন রাজ্যের ৭০০ প্রবীণ-নবীন কবি ও বাচিক শিল্পী। পরিবেশিত হবে কবিতা ও গান। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমি এই উৎসবের উদ্যোক্তা।