ফের বিতর্কের কেন্দ্রে মোদী সরকার। আগামী ২৪শে ডিসেম্বর, অর্থাৎ বড়দিনের আগের দিন ব্রিগেডে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন করতে চলেছে ভারতীয় হিন্দু পরিষদ। গীতাপাঠের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। এই উপস্থিতি অনুষ্ঠানে নিশ্চিতভাবে গেরুয়া রাজনীতির রঙ দেবে। কিন্তু বাংলার সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা ব্রাহ্মণরা এই গীতাপাঠে কতটা অংশ নেবেন, সেটাই এখন প্রশ্ন। কারণ এই কর্মসূচির প্রধান শর্ত হল, যোগ দিতে হলে নিজেদের গাঁটের কড়ি খরচ করে এসো। অর্থাৎ, ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের যে প্রতিনিধিরা গীতা পাঠ করতে চান, তাঁদের ফর্ম তোলা থেকে শুরু করে ট্রেনভাড়া, এমনকী গীতা কেনার টাকাও নিজেদের দিতে হবে। এতেই ব্রাহ্মণ সমাজে মাথাচাড়া দিয়েছে ক্ষোভ।
উল্লেখ্য, গীতাপাঠের এই মেগা কর্মসূচির নেপথ্যে রয়েছে সঙ্ঘ পরিবার ও তাদের নানা শাখা সংগঠন। তবে বিজেপি যদি এই অনুষ্ঠানে সরাসরি অর্থ সাহায্য করে, অরাজনৈতিক তকমাটি আর ধরে রাখা যাবে না। তাই গীতাপাঠের মুখ তথা ব্রাহ্মণদের জামাই আদর করে ব্রিগেড পর্যন্ত নিয়ে আসা বা তাঁদের ফলাহারের ব্যবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে তারা করতে পারবে না। সেক্ষেত্রে খরচের পুরো বোঝাটা তাঁদের কাঁধেই চাপিয়ে দেওয়া হবে। প্রথমেই কিনতে হচ্ছে একটি ফর্ম। তার মূল্য ২০ টাকা। এমনকী ছাত্রছাত্রীদেরও প্রবেশমূল্য ধার্য হয়েছে ১০ টাকা। সেই ফর্মে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, পরিচয়পত্রের ফোটোকপি সঙ্গে রাখতে হবে অংশগ্রহণকারীদের। গীতাপাঠের পদ্ধতি আগে থেকেই হোয়াটসঅ্যাপে জানিয়ে দেওয়া হবে। আছে ড্রেসকোডও। পুরুষদের সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে ধুতি বা পাজামা, আর মহিলাদের লাল পাড় সাদা শাড়ি। কিন্তু, যাতায়াতের খরচ আয়োজকরা দেবে না। সেই দায় এবং দায়িত্ব অংশগ্রহণকারীদের নিজস্ব। এতেই ছড়াচ্ছে। বারাসতের মাধবানন্দ মুখোপাধ্যায় বললেন, “গীতাপাঠের জন্য আবেদন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু যা ফরমান দেখলাম…! দরকার নেই। গাঁটের টাকা খরচ করে, নিরাপত্তার এত বাড়াবাড়ি পেরিয়ে গীতা পড়তে যেতে পারব না।” সরব হয়েছেন ব্রাহ্মণ সংগঠনের সদস্য মিলন আচার্য। “পুরোটা রাজনৈতিক। যে সব নিয়মের কথা বলছে, আমাদের মতো ব্রাহ্মণদের তা মেনে অংশ নেওয়া অসম্ভব। আমরা যাচ্ছি না”, জানিয়েছেন তিনি।