যদি ডাকাতি শিখতে চান, চলে আসুন! হ্যাঁ, শুনতে আজব হলেও সত্যি। রীতিমত পোস্টার সেঁটে দেওয়া হচ্ছে ডাকাতির ক্লাসের বিজ্ঞাপন। ভর্তি হচ্ছেন প্রচুর আগ্রহী ছাত্র। অভিজ্ঞ চোর-ছিনতাইবাজ-ডাকাতদলের সর্দাররাই শিক্ষক। তাঁরাই নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে দিনের পর দিন তৈরি করে চলেছেন শিক্ষার্থীদের। পরীক্ষায় উতরোতে না পারলে মেলে না সার্টিফিকেট পাওয়া যায়না। যে যত ভালো হাতসাফাই করতে পারবে, তাকে প্রথম সারির ডাকাত ছাত্রদের মধ্যে রাখা হয়। ঠিক এমনভাবে দিনের পর দিন ডাকাতদের হাতেকলমে ক্লাস করানোর রমরমা ব্যবসা চলছে বিহারের বিদুপুরে। বর্তমানে দিনেদুপুরে ডাকাতির স্কুলের জন্যই কুখ্যাত হয়ে উঠছে এই এলাকা। বাংলায় ঘতে যাওয়া একের পর এক ডাকাতির সঙ্গে ইদানিং বিহারের এই বিদুপুরের যোগ উঠে আসছে। সম্প্রতি রানাঘাট ও পুরুলিয়ায় সোনার দোকানের ডাকাতির সঙ্গে বিহারের এই বিদুপুরের যোগ রয়েছে। ঘটনার তদন্ত করতে করতে বিদুপুরে পৌঁছে সেখানে ডাকাত-স্কুলের খোঁজ পান তদন্তকারী দল।
এপ্রসঙ্গে পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, অন্তত ২৫০ জন ছাত্র আছে সেই স্কুলে। প্রথমে থিওরি, তারপর ফুটেজ দেখিয়ে চলে ক্লাস। ইউটিউব চ্যানেলও রয়েছে এই চক্রের। তবে তা সাবস্ত্রাইব করতে পারে এই গ্যাং মেম্বাররাই। সম্প্রতি, রানাঘাটের একটি সোনার দোকানে ডাকাতির যে ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনায় ধৃত বিদুপুরের বাসিন্দা ছিল। আবার বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লাকে খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিহারের পাটনা স্টেশন রোড এলাকা থেকে সিআইডি যাকে গ্রেফতার করে সেও বিদুপুরের বাসিন্দা।
সূত্রের খবর, বাড়তি রোজগারের টোপ দিয়ে গ্রামের ছেলেদের মগজধোলাই চালায় পাপ্পুর শাগরেদরা। তারপর নিয়ে আসা হয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। এমনকী, ছোটোখাটো অপরাধ করে কেউ জেলে গেলে টার্গেট করা হয় তাকেও। কীভাবে ডাকাতি করতে হবে, কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে সেসব কৌশল শেখানো হয় স্কুলে। সোনার দোকানে কোথায় ভল্ট রাখা থাকে, ব্যাঙ্কে ডাকাতি করতে হলে তার কৌশল কী, সবই নিখুঁতভাবে শেখায় ডাকাত-শিক্ষকরা। মাস দুয়েক ট্রেনিংয়ের পর প্রথম ব্যাচকে নামানো হয় কাজে। বাইরে বা ভিতরে অস্ত্র নিয়ে পাহারা দেয় তারা। আর বড় অপারেশনের দায়িত্ব পড়ে স্কুলের ‘প্রাক্তনী’দের কাঁধে। ওই স্কুলের ‘প্রিন্সিপাল’ পাপ্পু চৌধুরী। অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে সেই স্কুল চলছে ডাকাতদলের সর্দার পাপ্পুর তত্ত্বাবধানেই।